বর্তমানে ইউটিউব প্রতি মিনিটে প্রায় ৩০০ ঘন্টার ভিডিও আপলোড হয়, ঐ ভিডিওতে ৪ বিলিয়ন ভিউ হয়, যার মধ্যে ৩ বিলিয়ন ঘন্টা মানুষ ভিডিও দেখে।
এতো বড় সিস্টেমে বিভিন্ন দুই নাম্বারি হওয়া তো স্বাভাবিক কিন্তু ইউটিউব সব কিছুই নিয়ন্ত্রনে রাখছে।
আসলে এর পিছনে মূল পদ্ধতি হচ্ছে Content ID। সবাই আপনারা এটা জানেন, কিন্তু এই পর্যন্ত কেউ Content ID সিস্টেমে আপ্পলাই করার ধারের কাছেও গিয়েছিলেন নাকি সন্দেহ। খুবই কম মানুষ এই নিয়ে সতর্ক। বিশেষ করে বর্তমানে বাংলাদেশে। বড় বড় পপুলার চ্যানেলও কন্টেন্ট আইডিতে নিজের চ্যানেল আয়তাভুক্ত করেনি। যার পরিণাম একটাই, তার ভিডিও অন্যরা কপি মারে। আর সে সারাদিন বসে বসে একটা একটা করে রিপোর্ট মারে। তবুও কিছু হয় না।
দেখেন Content ID আপনার ভিডিওকে কি কি জিনিস হতে বাচাতে পারে। সাথে কোন কোন জিনিসে কপিরাইট ধরতে পারে।
- যেকোনো ভিডিও এর Mashup বা Compliation
- এমনকি রিমিক্স করা গানেও Content ID match হয়
- গেম খেলার ভিডিও
- মিউজিক বা ভিডিও
- কোন stage performance এর ভিডিও
- এমনকি কনসার্ট এবং বিভিন্ন শো পারফারমেন্সও
এখন বুঝতেই পারছেন এই জিনিসটা কতটা জরুরী। কিন্তু Content ID সিস্টেমে আপ্পলাই করার জন্য কিছু নিয়মাবলি আছে, সাথে রয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এগুলোতে ভুল হলে আপনার অ্যাকাউন্ট ব্যানও হতে পারে, আর বড় সড় কিছু হলে আপনাকে কোর্টেও যাওয়া লাগতে পারে। তাই সব কিছু বুঝে শুনে করবেন। Content ID তে আপ্পলাই করার জন্য অবশ্যই আপনার চ্যানেলের এই জিনিসগুলো অবশ্যই থাকতে হবে
- আপনার সব ভিডিও এর মালিক আপনাকে নিজেকে হতে হবে। এমনকি ভিডিওতে ব্যাবহার করা মিউজিকেরও। লাইসেন্স করা ভিডিও বা মিউজিক হলে অবশ্যই তার সার্টিফিকেট থাকতে হবে এবং তা আপ্পলাই করার সময় ইউটিউবে জমা দিতে হবে।
- আপনার চ্যানেলের একটি ওয়েবসাইট থাকতে হবে এবং ওয়েবসাইটের ভালো ডিজাইন ও নেভিগেশন থাকতে হবে।
- চ্যানেলে ওয়েবসাইট ভেরিফাই করা থাকতে হবে
- চ্যানেলের বয়স কমপক্ষে এক মাস হতে হবে
- চ্যানেলে সর্বনিন্ম ৫টি ভিডিও থাকতে হবে (যত বেশি হবে তত ভালো)
- ভিডিও যে আপনার এর সঠিক কোন প্রমাণ, যেমন ভিডিওতে আপনার চেহেরা, লিখিত কোন তথ্য যা দেখে ইউটিউব নিশ্চিত হতে পারে যে আপনার চ্যানেলের সকল ভিডিও এর মালিক আপনি নিজে।
এগুলোই লাগতে পারে। যদি আপনি আপনার চ্যানেলের সকল ভিডিও স্বত্বাধিকার হিসেবে কোন প্রমাণ না দিতে পারেন, তাহলে ইউটিউব আপনার আপ্লিকেশন রিজেক্ট করবে। কিন্তু হতাশ হওয়ার কিছু নেই। তারা যদি মনে করে আপনাকে content id এর অন্য কোন টুলস দেয়া যেতে পারে, তাহলে তারা আপনার ভিডিও কপি হলে তা আপনাকে নটিফিকেশনের মাধ্যমে জানিয় দেবে। কিন্তু তারা এটি খুবই কমই দিয়ে থাকে। এই পর্যন্ত এরকম কাউকে দেখিনি।
এখন দেখা যাক কিভাবে Content ID তে আপ্পলাই করবেন।
- আপনার যেই চ্যানেল দিয়ে কন্টেন্ট আইডির জন্য আপ্পলাই করতে চান সেই চ্যানেলে লগিন করুন।
- এখানে যান youtube.com/content_id_signup
- সকল ইনফরমেশন পূরণ করুন।
- এইবার উপরের সকল তথ্য পূরণ করার পর নিচে দুইটা বক্স দেখবেন
- প্রথমটি আপনি কেন Content ID Verfication Program এ আপ্পলাই করতে চান তার কারণ বিস্তারিত বলুন। 100-200 words দিলেই যথেষ্ট
- এরপরের বক্সে আপনার ভিডিও এর একটি লিস্ট দিবেন, যেই ভিডিওতে আপনার স্পেশাল অধিকার রয়েছে (কিছু প্রমাণআদি দিতে পারলে আরো ভালো)
- এখন সাবমিট করুন।
- ইউটিউব আপনাকে একটা ফিরতি মেইল পাঠিয়ে দিবে। যার মধ্যে আপ্পলাই করার কনফারমেশন পাবেন।
এখন অপেক্ষা করুন যতখন পর্যন্ত না ইউটিউব কপিরাইট সেন্টারের মেইল থেকে আপ্প্রভ হওয়ার মেইল আসছে।
দারান দারান আপনার কাজ শেষ হয়ে যায়নি। যদি আপনার ভিডিও Content id program এ আপ্প্রভ হয়েও যায় তবুও আর কাজ আছে।
- আপনাকে আপনার ভিডিও নিয়ে ইউটিউবে একটি এগ্রিমেন্ট দিতে হবে, যার মধ্যে আপনাকে দেখিয়ে দিতে হবে কোন ভিডিও এর উপর আপনি অফিশিয়ালি অধিকারের মালিক। আপনার চ্যানেলের ৫০%+ ভিডিও এর উপর আপনার সম্পূর্ণ কপিরাইট থাকতে হবে।
- আর যদি আপনার ভিডিও এর উপর অধিকার পুরো বিশ্বব্যাপী না হয়, তাহলে আপনাকে বাংলাদেশের জন্য Ownership prove করতে হবে।
যদি কন্টেন্ট আইডি আপ্প্রভ হয় তাহলে আপনার ভিডিও কেউ কপি করলে আপনি তার বিরুধে এই অ্যাকশনগুলো নিতে পারবেন
- ভিডিও বিশ্বব্যাপী ব্লক করা
- ভিডিও তার বিরুধে মনেটাইজ করা। তার মানে ঐ ভিডিও এর অ্যাড রেভিনিউ থেকে যত যা টাকা আসবে সব আপনি পাবেন
- ভিডিও মিউট করা
এতো কিছুর পর যে কেউ ভাবতেই পারে, কন্টেন্ট আইডি না থাকলে কপিরাইট ধরবে না। এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। কপিরাইট অবশ্যই ধরবে। কিন্তু Content ID এর মত এতো কঠোর ভাবে ধরতে পারবে না। আর কপিরাইট না আসলে অবশ্যই commercial use rights চাইবে।
অনেক আগে এগুলো নিয়ে ঘাটাঘাটি করেছিলাম। প্রায় ৪-৫ মাস আগে। সব কিছু মনে নেই। ভুল হলে তা সংশোধন করার জন্য অবশ্যই আমাকে জানাবেন