জন্ম পরিচয়ে সন্তুষ্ট থাকতে না পেরে
অস্ত্রোপচার করে নিজের লিঙ্গ পাল্টে ফেলেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইয়ের
ট্রেসি লিউয়ানানি লা গোনডিনো। ২০০২ সালে লিঙ্গ পরিবর্তনের মাধ্যমে নারী
থেকে পুরুষ হয়ে যাওয়া ট্রেসির নতুন নাম হয় থমাস ট্রেস বেটি। এরপর সিক্স
প্যাক শরীর, শ্মশ্রূমণ্ডিত মুখমণ্ডল– অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সবই সম্ভব
করেছিলেন থমাস। সেই থমাস বেটির তিন সন্তান নিয়ে সারা পৃথিবীতে কত তোলপাড় !
থমাস বেটির ঘটনার এক বছর পর আরেক
‘রূপান্তরকামী’কে নিয়ে সারাবিশ্বে শুরু হয়েছে তুমুল আলোচনা। যুক্তরাষ্ট্রের
এই রূপান্তরকামীর নাম কেডেন কোলেম্যান। এই কোলেম্যান আবার থমাস বেটির
উল্টো ! তিনি ছিলেন পুরুষ।কিন্তু নিজেকে নারী হিসেবে দেখতে চাওয়ার ইচ্ছায়
চিকিৎসাশাস্ত্রের সাহায্য নিয়ে নারী হিসেবে গড়ে তুললেন নিজেকে ।
কী বলবেন রূপকথা? কল্পবিজ্ঞানের গল্প? নাকি সত্যিই বিজ্ঞানের দুর্দান্ত জয়। অথবা প্রকৃতির বিরুদ্ধে এক গোল?
কেডেন কোলেম্যানের জীবনের গল্প যে সেরকমই।
তিনি ছিলেন পুরুষ। কিন্তু এ সমাজের অনেকের মতোই হলেন রূপান্তরকামী। নিজেকে
ডাক্তারদের চিকিত্সাশাস্ত্রের সাহায্য নিয়ে গড়ে তুললেন নারী।
নারী হওয়া তো হল। তাহলে কি জীবনটাও থেমে
যাবে এবার? না, থেমে থাকেননি কেডেন কোলেম্যান। ২০১২ থেকে ডেট করা শুরু করেন
ফিলাডেলফিয়ার এলিজার সঙ্গে। এরপর তিনি বিয়ে করেন এলিজাকে। এলিজা তাঁর
স্বামী। ২০১৩ সালে কোলেম্যান অনুভব করেন, তাঁর পেটটা একটু একটু করে ফুলে
উঠছে। কিন্তু তিনি যে ‘মা’ হতে পারেন, এটা তাঁর কল্পনাতেও আসেনি।
কিন্তু পরে কোলেম্যান বুঝতে পারেন যে,
তিনি সত্যিই মা হতে চলেছেন। ২১ সপ্তাহের একটি ভ্রূণ তাঁর গর্ভে একটু একটু
করে বড় হচ্ছে। কোলেম্যান আর এলিজার চিন্তা বাড়তে থাকে। এ সমাজ
রূপান্তরকামীদের বিয়ের তো স্বীকৃতি দেয়। কিন্তু তা বলে, লোমশ পুরুষ কিনা
দেবে, তাঁর গর্ভে পুরুষের জন্ম! তাই খানিকটা চুপিসারেই গর্ভের সন্তানকে বড়
করতে থাকেন কোলেম্যান। আর তাঁর সমস্ত খেয়াল রাখতে থাকেন আলিজা।
অবশেষে এল সেই দিন। জয় হল চিকিত্সা শাস্ত্রের। সত্যিই এক ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম দিলেন কোলেম্যান।নাম দিলেন আজাইলিয়া।আজ কোলেম্যানের মেয়ের বয় প্রায় দুবছর (২২ মাস)। আজাইলিয়াকে ছেড়ে একটা মুহূর্তও থাকতে পারে না সে। যদিও ইতিহাস বলে কোলেম্যানের আগেও সন্তানের জন্ম দিয়েছেন এক রূপান্তরকামী। ২০০৭ সালে সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন থমাস বেটি। কিন্তু কোলেম্যানের সংসারের গল্প যে সত্যিই ভালোলাগার। তাতে প্রথম নেই। তবু রোমাঞ্চ আছে। জয়ের আনন্দ আছে