বর্তমানে সারা বিশ্ব জুড়ে ল্যাপটপের চাহিদা এবং জনপ্রিয়তাও ব্যাপক
বাংলাদেশেও এর চাহিদা ও জনপ্রিয়তা কম নয়। আমরা যারা অনলাইনে কাজ করি তাদের
প্রায় অর্ধেকের বেশি লোকেরই ল্যাপটপ আছে। কিন্তু ল্যাপটপ ব্যাবহারের সময়
আমরা অনেকেই এর সঠিক পরিচর্যা করিনা যার কারনে আমাদের এই অতি প্রয়োজনীয়
ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র টি অভিমান করে অকালে মৃত্যুর কলে ধলে পরে। কিন্তু আসার
কথা হল এর মৃত্যু হলেও একে আবার জীবিত করা যায়। কিন্তু এর জন্য যেই চিকিৎসা
খরচ বহন করতে হয় তা কিন্তু কম নয়। আর ল্যাপটপ ঠিক হলেও সেটা আগের মত
থাকেনা। আমরা যদি কিছু নিয়ম মেনে যত্ন করে আমাদের ল্যাপটপ ব্যবহার করি
তাহলে আমাদের ল্যাপটপটির স্থায়িত্ব বাড়বে, নষ্ট কম হলে মেরামতের খরচও কমে
যাবে এবং ল্যাপটপের গতি বাড়াতেও সাহায্য করবে। তাই সামান্য অসাবধানতার জন্য
আপনার প্রিয় ল্যাপটপের যেন কোনো ক্ষতি না হয় সেই জন্য অবশ্যই আপনার
লাপটপের যত্ন নিতে হবে। নিচে কিভাবে আমরা ল্যাপটপ এর যত্ন নিতে পারি তা
উল্লেখ করা হল।
১. যে কোনো ধরনের তরল পদার্থ ল্যপটপ থেকে দূরে রাখুন ল্যপটপের আশেপাশে
যে কোনো ধরনের তরল পদার্থ যেমন পানি, চা, কফি, সফট ড্রিংস ইত্যাদি রাখবেন
না। এসব পানিয় দ্রব্য পানের সময় অসাবধানতার কারনে যদি ল্যপটপে পড়ে যায় তবে
তা আপনার ল্যাপটপের অনেক ক্ষতি করতে পারে। এসব পানিয় দ্রব্য ল্যপটপের
অভ্যন্তরীণ ইলেক্ট্রনিক সার্কিটগুলোকে অকেজো করে দিতে পারে। যা মেরামত করা
অনেক খরচ সাপেক্ষ।
২.ল্যাপটপ এর উপর ভারী কিছু রাখবেন না। যেহেতু,ল্যাপটপের পুরুত্ব খুব
বেশি নয় এবং এর উপর প্রান্তে ডিসপ্লে (মনিটর) অংশ থেকে থাকে তাই ভারী কোন
কিছু রাখা বা কোন চাপ পরার কারণে ল্যাপটপটির ডিসপ্লেতে সমস্যা হতে পারে।
৩. ল্যাপটপ ব্যবহারের আগে হাত পরিষ্কার করে নিন। হাতে জমে থাকা ময়লা
আপনার ল্যাপটপের কী-প্যাড ও টাচ প্যাডে ময়লার আবরন তৈরি করতে পারে। এছাড়াও
হাত ধুয়ে ল্যাপটপ ব্যবহার করলে ঘাম ও ছোট ছোট ধুলাবালির কারনে কীপ্যাডের রং
ক্ষয়ও অনেকটা কমানো যাবে।
৪.স্ক্রিন প্রোটেক্টরের সাথে সাথে কিবোর্ড প্রোটেক্টরও ব্যবহার করুন। এতে
করে কিবোর্ডের কীগুলোর ফাঁক দিয়ে ধুলো জমবে না। বাজারে ১৫০ টাকার মধ্যে
স্ক্রিন প্রোটেক্টর এবং ৭০ থেকে ৮০ টাকার মাঝে কিবোর্ড প্রোটেক্টর পাওয়া
যায়। এছাড়াও আপনি মাঝে মাঝে মিনি ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়েও কিবোর্ড পরিষ্কার
করতে পারেন। বাজারে ২৫০ টাকার মাঝে মিনি ইউএসবি ভ্যাকয়াম-ক্লিনার পাবেন।
৫. সূর্যের আলো থেকে দূরে রাখুন। সরাসরি সূর্যের আলো পরে অথবা
স্বাভাবিকের চাইতে গরম- এমন কোন স্থানে ল্যাপটপ রাখবেন না বা ব্যবহার করবেন
না। তবে মাঝে মাঝে ব্যাটারির চার্জ অর্ধেক রেখে সূর্যের আলোতে ব্যাটারি
খুলে কিছুক্ষণ রেখে দিলে তা ব্যাটারির জন্য ভালো।
৬. ভালো অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করুন: যে কোনো ডাউনলোডকৃত
ফাইলেই ভাইরাস থাকতে পারে যা অনেক ক্ষেত্রে সার্কিটের সমস্যা ও সফটওয়্যার
সমস্যার সৃস্টি করতে পারে। এছাড়া অনেক ভাইরাস আপনার ল্যপটপের স্পিড স্লো
করে দিতে পারে। তাই অনেকেই স্পিড কমে যাওয়ার ভয়ে ল্যাপটপে অ্যান্টিভাইরাস
ব্যবহার করেনা। তারা দ্রুত একটি ভালো অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার
করুন।
৭. ল্যপটপ তোলার সময় এর কেসিং ধরে তুলুন মনিটর ধরে নয়। যদি আপনি ল্যাপটপ
তোলার সময় এর মনিটর ধরে তোলেন তাহলে তা স্ক্রিনে দাগ সৃষ্টি করতে পারে
এমনকি ডিসপ্লে নষ্টও হয়ে যেতে পারে।
৮. ল্যাপটপের বিল্ট-ইন সিডি অথবা ডিভিডি রমে ভালো সিডি-ডিভিডি ব্যবহার
করতে চেষ্টা করুন। কেননা, এতে ব্যবহৃত সিডি অথবা ডিভিডি রমের লেন্স ডেস্কটপ
এর সিডি – ডিভিডি রম থেকে কিছুটা কম শক্তিশালী হয়ে থাকে। ল্যাপটপের সিডি
অথবা ডিভিডি রমও অতিরিক্ত বিদ্যুৎ গ্রহণ করে। তাই সরাসরি সিডি অথবা ডিভিডি
রম থেকে মিডিয়া ফাইল প্লে না করে হার্ডডিস্কে কপি করে তারপর প্লে করুন।
৯. প্রয়োজন না হলে ব্লুটুথ এবং ওয়াইফাই চালু করে রাখবেন না এবং
‘শাটডাউন’ ও ‘স্লিপের’ পরিবর্তে ‘হাইবারনেট’ অপশন ব্যবহার করুন।
‘হাইবারনেট’ হচ্ছে এমন একটি অবস্থায় চলে যাওয়া যা আপনার সে মুহুর্তের
কাজগুলো একটি ফাইলে জমা রেখে আপনাকে এমন একটি স্টেটে (অবস্থায়) নিয়ে যাবে
যা প্রায় বিদ্যুৎ ব্যবহার না করারই সমান। পরবর্তী সময়ে সিস্টেম রিজিউম করলে
আপনাকে আপনার সকল কাজের প্রোগ্রেস ঠিক সেখানেই ফিরিয়ে দেবে যেখানে আপনি
হাইবারনেট করেছিলেন।
১০. ল্যাপটপ যেহেতু বেশ গরম হয়ে যায় তাই চেষ্টা করুন কুলার ব্যবহার
করতে। বাজারে ৩৫০ টাকা থেকে শুরু করে ২৫০০-৩০০০ টাকার মাঝে কুলার পাবেন।
তবে আমার মতে মাঝামাঝি দামের গুলো কিনলেই আপনার কাজ চলে যাবে।
১১. খাদ্যদ্রব্য ল্যপটপ থেকে দূরে রাখুন: ল্যপটপ ব্যবহারের সময় খাওয়া দাওয়া করবেন না। খাবারের ছোট ছোট টুকরা বা গুড়া ল্যাপটপের কী-বোর্ডের ফাঁক দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে। এছাড়াও এর মাধ্যমে ল্যাপটপের ওপরের অংশে ময়লার আস্তরন জমতে পারে।
১২. ল্যাপটপের মনিটরটির যত্ন নিন: ল্যপটপটি বন্ধ করার সময় খেয়াল রাখুন যেন কী-বোর্ডের ওপরে কোনো ছোট বস্তু না থাকে। যে কোনো ছোট জিনিস হলেও তা আপনার এলসিডি স্ক্রিনটিতে দাগ সৃষ্টি করতে পারে। এলসিডি মনিটরটি বন্ধ করার সময় মাঝখানে ধরে বন্ধ করবেন। বারবার শুধু সাইডে ধরে বন্ধ করার ফলে তা বেঁকে যেতে পারে।
১৩. সঠিক মাপের ল্যাপটপ ব্যাগ ব্যবহার করুন। ল্যপটপের ব্যাগ নির্বাচনের
সময় খেয়াল রাখুন যেন আপনার ল্যাপটপটি সহজেই ভ্যাগটিতে তোলা ও নামানো যায়
অর্থ্যাৎ ব্যাগটিকে পর্যাপ্ত বড় হতে হবে। ল্যাপটপ নিয়ে কোথাও যাওয়ার সময়
ল্যাপটপ ব্যাগ ব্যবহার করবেন। এতে ল্যাপটপটি পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে।
১৪. বিছানায় ল্যাপটপ ব্যবহার করবেন না। সবসময় বিছানাতেই ল্যাপটপ
ব্যবহারের ফলে বিছানার ময়লাগুলো ল্যাপটপের ফ্যানের মাধ্যমে ভেতরে ঢুকে যেতে
পারে। যা ফ্যানটিকে ব্লক করার পাশাপাশি অভ্যন্তরিন যন্ত্রপাতিরও ক্ষতি
করতে পারে।
১৫. ল্যাপটপ ব্যাগে অতিরিক্ত কিছু নেওয়ার সময় সতর্ক থাকুন। ল্যাপটপ ব্যাগে ল্যাপটপের সাথে ভারি কিছু নেওয়া থেকে বিরত থাকুন। এগুলো ল্যাপটপের কেসিং ভেঙ্গে যাওয়ারও কারন হতে পারে।
১৬. পায়ের ওপর রেখে বেশি সময় ধরে ল্যাপটপ ব্যবহার করবেন না। এতে
ল্যাপটপের ভেতরে গরম হয়ে যেতে পারে যা আপনার ল্যাপটপের আয়ু কমিয়ে দেবে।
১৭. হঠাৎ পরিবর্তিত কোনো তাপমাত্রায় ল্যাপটপ ব্যবহার করবেন না। আপনি যদি বাইরে থেকে কোনো শিতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে প্রবেশ করেন তাহলে তখনই আপনার ল্যাপটপটি চালু করবেন না। আগে নতুন তাপমাত্রার সাথে এর অভ্যন্তরিন তাপমাত্রা পরিবর্তিত হতে দিন।
১৮. যে কোনো প্রকার ম্যাগনেটিক ফিল্ড থেকে ল্যাপটপটি দূরে রাখুন। বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি যেমন টিভি, ফ্রিজ ইত্যাদি হতে সৃষ্ট ম্যাগনেটিক ফিল্ড হতে আপনার ল্যাপটপটি দুরে রাখুন। এসব ম্যাগনেটিক ফিল্ডের আকর্ষনে আপনার ল্যাপটপের অভ্যন্তরিন ক্ষতি হতে পারে।
১৯. ল্যাপটপ পরিষ্কার রাখুন। নরম কাপড় দ্বারা ল্যাপটপের মনিটর পরিষ্কার
করুন। একইভাবে নরম কাপড় বা পুরোনো টুথব্রাশ দিয়ে কী-বোর্ড ও অন্যান্য অংশ
পরিষ্কার করতে পারেন।
২০. ল্যপটপের কোনো অংশ না জেনে খুলতে যাবেন না। ল্যাপটপের কোনো সমস্যা
দেখা গেলে কোনো কিছু না জেনে নিজেই ঠিক করতে যাবেন না। এতে অন্য কোনো অংশও
ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। তাই কোনো সমস্যা দেখা দিলে উপযুক্ত ব্যক্তিকে দিয়ে
তা ঠিক করিয়ে নিন।
১১. খাদ্যদ্রব্য ল্যপটপ থেকে দূরে রাখুন: ল্যপটপ ব্যবহারের সময় খাওয়া দাওয়া করবেন না। খাবারের ছোট ছোট টুকরা বা গুড়া ল্যাপটপের কী-বোর্ডের ফাঁক দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে। এছাড়াও এর মাধ্যমে ল্যাপটপের ওপরের অংশে ময়লার আস্তরন জমতে পারে।
১২. ল্যাপটপের মনিটরটির যত্ন নিন: ল্যপটপটি বন্ধ করার সময় খেয়াল রাখুন যেন কী-বোর্ডের ওপরে কোনো ছোট বস্তু না থাকে। যে কোনো ছোট জিনিস হলেও তা আপনার এলসিডি স্ক্রিনটিতে দাগ সৃষ্টি করতে পারে। এলসিডি মনিটরটি বন্ধ করার সময় মাঝখানে ধরে বন্ধ করবেন। বারবার শুধু সাইডে ধরে বন্ধ করার ফলে তা বেঁকে যেতে পারে।
১৫. ল্যাপটপ ব্যাগে অতিরিক্ত কিছু নেওয়ার সময় সতর্ক থাকুন। ল্যাপটপ ব্যাগে ল্যাপটপের সাথে ভারি কিছু নেওয়া থেকে বিরত থাকুন। এগুলো ল্যাপটপের কেসিং ভেঙ্গে যাওয়ারও কারন হতে পারে।
১৭. হঠাৎ পরিবর্তিত কোনো তাপমাত্রায় ল্যাপটপ ব্যবহার করবেন না। আপনি যদি বাইরে থেকে কোনো শিতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে প্রবেশ করেন তাহলে তখনই আপনার ল্যাপটপটি চালু করবেন না। আগে নতুন তাপমাত্রার সাথে এর অভ্যন্তরিন তাপমাত্রা পরিবর্তিত হতে দিন।
১৮. যে কোনো প্রকার ম্যাগনেটিক ফিল্ড থেকে ল্যাপটপটি দূরে রাখুন। বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি যেমন টিভি, ফ্রিজ ইত্যাদি হতে সৃষ্ট ম্যাগনেটিক ফিল্ড হতে আপনার ল্যাপটপটি দুরে রাখুন। এসব ম্যাগনেটিক ফিল্ডের আকর্ষনে আপনার ল্যাপটপের অভ্যন্তরিন ক্ষতি হতে পারে।