স্টেমসেলের ব্যবহার।

স্টেমসেল গবেষণা মানবদেহের অনেক জটিল রোগ নিরাময়ে সাহায্য করতে পারবে। গবেষকেরা আগামী দিনে এমন একটি প্রাথমিক স্টেমসেল তৈরি করছেন, যার কর্মপ্রক্রিয়া তারা নিজেদের মতো করে নির্ধারণ করবে। এ গবেষণার উদ্দেশ্যে হচ্ছে, প্রাপ্তবয়স্ক কোষ থেকে এসব স্টেমসেল তৈরি করা, যারা ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশেও কাজ করতে সক্ষম হবে।
স্টেমসেলের বিশেষ পরিবর্তন করে মস্তিষ্কের ক্যান্সার ধ্বংসকারী বিষ তৈরি করার পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক। এটি প্রয়োগ করে ক্যান্সার ধ্বংস করার ক্ষেত্রে সাফল্য পাওয়া গেছে। এতে রোগটির চিকিৎসা গবেষণায় নতুন সম্ভাবনা তৈরি হলো। জিন প্রকৌশলের মাধ্যমে স্টেমসেলের পরিবর্তন ঘটানোর মাধ্যমে বিশেষ ধরনের বিষ তৈরি করা হয়েছে। স্টেমসেল থেকে নিঃসৃত ওই বিশেষ বিষ স্টেম সেল এবং মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কোষের কোনো ক্ষতি না করে শুধু ক্যান্সার কোষ বা টিউমার ধ্বংস করে। গবেষকেরা মানুষের মস্তিষ্কের ক্যান্সারের চিকিৎসায় এই পদ্ধতি প্রয়োগ করতে আগ্রহী।
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হসপিটাল এবং হার্ভার্ড স্টেমসেল ইনস্টিটিউটের এক দল বিজ্ঞানী গবেষণা চালিয়ে স্টেমসেল থেকে ক্যান্সার ধ্বংসকারী বিষ উৎপাদনের প্রচেষ্টা চালান। গবেষকেরা দীর্ঘ দিন ধরেই স্টেমসেল ভিত্তিক থেরাপি বা চিকিৎসাপদ্ধতি উদ্ভাবনের চেষ্টা করছেন, যা অন্য কোষকে অক্ষত রেখে শুধু টিউমারই ধ্বংস করবে। তারা জিন প্রকৌশলের মাধ্যমে স্টেমসেলকে বিষ উৎপাদনকারী কোষে পরিণত করলেও ওই বিষের প্রভাবে স্টেমসেল নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। একই সাথে বিষটি স্বাভাবিক ও সুস্থ কোষের জন্যও হুমকি নয়।
কোষের সব ধরনের গবেষণা এবং মস্তিষ্কের টিউমারের প্রোটিন গ্রহণপ্রক্রিয়া নিয়ে বিশ্লেষণ থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, স্টেমসেল থেকে নিঃসৃত বিষের কারণে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস হয়। আগে বিভিন্ন ধরনের ব্লাড ক্যান্সারের চিকিৎসায় ক্যান্সার ধ্বংসকারী বিষ ব্যবহার করে সাফল্য পাওয়া গেছে।
টেকো মাথায় চুল গজানোর সমস্যার সমাধানে আশার কথা শোনাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। মানুষের স্টেম সেল ব্যবহার করে নতুন চুল গজানোর পরীক্ষায় সফল হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। যুক্তরাষ্ট্রের স্টানফোর্ড-বার্নহাম মেডিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (স্টানফোর্ড-বার্নহাম) গবেষণায় যাদের চুল পড়ে গেছে, তাদের জন্য সেলভিত্তিক চিকিৎসাপদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন।
গবেষকরা এমন একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন, যেখানে মানুষের স্টেমসেল থেকে নতুন সেল তৈরি হবে এবং তা চুল গজাতে সক্ষম হবে। বর্তমানে প্রচলিত প্রতিস্থাপন পদ্ধতির চেয়ে এটি উন্নততর। প্রতিস্থাপন পদ্ধতিতে বিদ্যমান চুল মাথার এক গ্রন্থি থেকে আরেক গ্রন্থিতে সরিয়ে নেয়া হয়। স্টেমসেল পদ্ধতিতে প্রতিস্থাপনের জন্য অগণিত নতুন সেল পাওয়া যাবে। ফলে বিদ্যমান চুলের গ্রন্থির সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে।
নতুন পদ্ধতিতে মানুষের প্লুরিপোটেন্ট স্টেমসেলগুলো ডার্মাল পাপিলা সেলে পরিণত হবে। এটি একটি অনন্য সেল হিসেবে কাজ করবে, যা গ্রন্থিকে নিয়ন্ত্রণ করবে এবং বৃদ্ধি ঘটাবে।

শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট