প্রতিবেশী আপনার ইন্টারনেট চুরি করছে কি?

প্রতিবেশী আপনার ইন্টারনেট চুরি করছে কি?

হঠাৎ ওয়াইফাই ইন্টারনেটের গতি কমে গেছে? ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার যদি জানায় তারা গতিতে কোনো পরিবর্তন আনেনি তার পরেও আপনার ইন্টারনেটের গতি অজ্ঞাত কারণে কমে গেছে। তাহলে প্রতিবেশী কেউ আপনার ওয়াইফাই ইন্টারনেট ব্যবহার করছে কি না, তা লক্ষ করুন। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে ফক্স নিউজ।
যেভাবে ধরবেন ইন্টারনেট চোর
আপনার ইন্টারনেট রাউটারে লগইন করুন। এরপর সেখানে যে গ্যাজেটগুলো সংযুক্ত রয়েছে সেগুলোর তালিকাটি দেখুন। এতে যদি আপনার অপরিচিত কোনো গ্যাজেট থাকে তাহলে বুঝবেন সেটি আপনার ইন্টারনেট অজান্তেই ব্যবহার করছে।
আপনি যদি রাউটারের সেটিংগুলো ঠিকঠাক বুঝতে না পারেন তাহলে এর সঙ্গে যে ম্যানুয়াল আছে সেটি দেখুন। এতেই বিস্তারিত লেখা পাওয়া যাবে। রাউটারের ম্যানুয়াল পাওয়া না গেলে অনলাইনে খুঁজে দেখতে পারেন।
প্রতিবেশী আপনার ইন্টারনেট চুরি করছে কি?
ইন্টারনেট চুরি থামান
আপনার আশপাশের কোন বাড়ি বা অফিস থেকে ইন্টারনেট চুরি হচ্ছে তা আপনার পক্ষে সরাসরি ধরা সম্ভব নাও হতে পারে। এক্ষেত্রে আপনার কাজ হবে রাউটার থেকে সন্দেহজনক গ্যাজেটটিকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া এবং ভবিষ্যতে যেন এটি ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করতে না পারে সেজন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থায় পরিবর্তন করা। এজন্য অবশ্যই পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করতে হবে নিয়মিত। এছাড়া ব্যবহার করা না হলে রাউটারটি বন্ধ রাখুন। শুধু ব্যবহারের সময়েই চালু রাখুন। এতে ইন্টারনেট চোর নিরুৎসাহিত হবে।
পাশাপাশি রাউটারের অন্যান্য নিরাপত্তা ব্যবস্থাও বৃদ্ধি করুন। সংযোগ যেন নিরাপদ প্রটোকলের মাধ্যমে হয় সেটি দেখে নিন। রাউটারের কোনো নিরাপত্তা ত্রুটির কারণে যেন ইন্টারনেট চোর সুযোগ না পায় সেজন্য রাউটারটি ফ্যাক্টরি রিসেট করুন

আঙুলের ছাপ পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন পরীক্ষামূলকভাবে শুরু।

আঙুলের ছাপ পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন পরীক্ষামূলকভাবে শুরু।

পরীক্ষামূলকভাবে আজ থেকে শুরু হয়েছে আঙুলের ছাপ বা বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনের কাজ। রবিবার পরীক্ষামূলক এ কার্যক্রম দেখতে বিভিন্ন অপারেটরের গ্রাহক সেবা কেন্দ্রে যান ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
প্রতিমন্ত্রী দুপুর ১২টা থেকে পর্যায়ক্রমে গুলশানে রবি, গ্রামীণ ফোন, টেলিটক, বাংলালিংক ও এয়ারটেলের গ্রাহক সেবা কেন্দ্রে যান। তিনি গ্রাহক ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ​আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে এই পদ্ধতি চূড়ান্তভাবে চালু হবে। তার প্রস্তুতি কতটুকু, সেটা দেখতে তিনি এসেছেন।
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ, ভাইস চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবীব খান, অবসরপ্রাপ্ত ও সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিসেস ডিভিশনের ডিরেক্টর জেনারেল ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. এমদাদ উল বারী, এনডিসি, পিএসসি, টিসি।

‘সিম নিবন্ধনে বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি চালু হচ্ছে নভেম্বরে, ডিসেম্বর থেকে বাধ্যতামূলক’

‘সিম নিবন্ধনে বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি চালু হচ্ছে নভেম্বরে, ডিসেম্বর থেকে বাধ্যতামূলক’


বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি
মোবাইল ফোনের সিম নিবন্ধনে পরীক্ষামূলকভাবে বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি (আঙুলের ছাপ) চালু হচ্ছে। আগামী ১ নভেম্বর থেকে মোবাইল অপারেটররা নিজেদের গ্রাহক সেবা কেন্দ্রে এ পদ্ধতি চালু করবে। তথ্যগুলো জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে ছয় মোবাইলফোন অপারেটরদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, সঠিকভাবে নিবন্ধন করতে হবে। এটি গ্রাহকদের জন্য সতর্কবার্তা। আগামী ১ নভেম্বর থেকে অপারেটররা প্রতিটি অপারেটর তাদের নিজ নিজ সার্ভিস সেন্টার থেকে পরীক্ষামূলকভাবে বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন শুরু করবে। আর চূড়ান্তভাবে কার্যক্রম শুরু হবে ১৬ ডিসেম্বর। সচেতন গ্রাহকরা নিজ উদ্যোগে এখানে এসে নিজ নিজ সিমের নিবন্ধন করতে পারবেন। তথ্যগুলোও যাচাই-বাছাই করতে পারবেন।
তারানা বলেন, ১ নভেম্বর থেকে সচেতন গ্রাহকরা নিজে থেকে সার্ভিস সেন্টারে গিয়ে সিমের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবেন।
তিনি জানান, চূড়ান্তভাবে এ পদ্ধতি শুরু হলে প্রাধাণ্য পাবে ফেক আইডির বিপরীতে সিম নিবন্ধনকারীরা এবং সঠিক এনআইডির বিপরীতে অস্বাভাবিকভাবে সিম নিবন্ধনকারীরা।


প্রতিমন্ত্রী বলেন, এভাবে আশা করি, নিশ্চিত হতে পারবো সিমগুলো সঠিক মালিকই ব্যবহার করছেন। এ সম্পর্কিত তথ্যগুলো এনআইডি, মোবাইল অপারেটর ও কিছু ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ে থাকবে। তিনি বলেন, সামনে আরও কর্মযজ্ঞ হাতে নেবো। মানুষকে সচেতন করবো। অসচেতনতার দায়ভার নিয়ে চললে চলবে না। ব্লেইম গেম আর নয়। ডিসেম্বরের মধ্যে সবাইকে নিজের নিরাপত্তায় নিশ্চিন্ত হতে হবে।
সচেতন গ্রাহকদের নিজেদের সিম সঠিক ভাবে নিবন্ধন করার আহ্বান জানিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা তারানা বলেছেন, যাদের বয়স ১৮’র নিচে তাদের সিম নেওয়ারই অনুমতি নেই। তবে যদি নিতেও হয়, তবে অভিভাবকের এনআইডির বিপরীতে সিম নিবন্ধন করতে হবে। আর ওই সিম দিয়ে কোনো অপরাধ হলে, সে দায়ও পরিচয়পত্রের মালিককেই নিতে হবে।
বৈঠকের শুরুতেই চোখে আতঙ্কের ছাপ, কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ আর ঠোঁটে শ্লেষ নিয়ে তারানা বলেন, “কেবল একটিমাত্র জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে নিবন্ধন হয়েছে ১৪ হাজার ১১৭টি সিম! এখানেই শেষ নয়। এরকম আরও রয়েছে। আরেকটি এনআইডি’র বিপরীতে ১১ হাজার ৭২৮টি সিম নিবন্ধন হয়েছে। এগুলো সবই অবৈধ।”
এরপর একে এক তুলে ধরে দেশজুড়ে বিভিন্ন অপারেটরের মোট গ্রাহক সংখ্যা ও প্রাপ্ত ডাটা এবং সেই সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে নিবন্ধনের তথ্য।
তারানা হালিম বলেন,  “গ্রাহকের হাতে থাকা প্রায় ১৩ কোটি সিমের মধ্যে এক কোটির তথ্য সরকার হাতে পেয়েছে, যার ৭৫ শতাংশই ‘সঠিকভাবে নিবন্ধিত নয়।”
তিনি বলেন, “জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে এয়ারটেল, জিপি, সিটিসেল, রবি, টেলিটক, বাংলালিংকের নিবন্ধনের চিত্র খুব একটা আশাব্যঞ্জক নয়। ছয় অপারেটরের মাধ্যমে সিম নিবন্ধনে মাত্র ৬ হাজার ১৭৯টি পরিচয়পত্র ব্যবহার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় এক কোটি গ্রাহকের নিবন্ধন যাচাই করা হয়েছে। এর মধ্যে সঠিকভাবে নিবন্ধন হয়েছে মাত্র ২৩ লাখ ৪৩ হাজার ৬৮০টি।”
বৈঠকে সকল জাল নিবন্ধিত বা অবৈধ সিম বড় ধরনের অপরাধ হতে পারে এমন শঙ্কা প্রকাশ করে সকল অপারেটরকে সতর্ক হবার নির্দেশ দেন তারানা হালিম।
তারানা হালিম বলেন, “গতকাল পর্যন্ত অপারেটররা গ্রাহকদের যে তথ্য দিয়েছে তা খুবই অপর্যাপ্ত। সব অপারেটর মিলিয়ে প্রায় ১৩ কোটি সিম আছে। এর মধ্যে মাত্র ৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ সিমের তথ্য মিলেছে।”
তিনি জানান, অপারেটরদের মধ্যে এয়ারটেল ১৪ লাখ চার হাজার ৯৩৮ জন, বাংলালিংক ২৩ লাখ ৫৫ হাজার, সিটিসেল দিয়েছে ৪ লাখ ১৪ হাজার, রবি ১৮ লাখ এবং রাষ্ট্রায়াত্ত প্রতিষ্ঠান টেলিটক ১৬ লাখ গ্রাহকের তথ্য দিয়েছে।
আর দেশের সবচেয়ে বড় অপারেটর গ্রামীণফোন তাদের পাঁচ কোটির বেশি গ্রাহকের মধ্যে মাত্র ২২ লাখের নিবন্ধনের তথ্য দিয়েছে। এই হিসাব অনুযায়ী, গ্রামীণফোনের গ্রাহক সংখ্যার ৯৫ দশমিক ০২ শতাংশ সিমই অনিবন্ধিত।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ বুঝতে পারেন- এমন করেই প্রচারণা চালানো হবে। তারপরও না করলে শেষ পর্যায় পর্যন্ত সুযোগ দিতে চাই।
অপর প্রশ্নের জবাবে বলেন, বৈধভাবৈই অনেকে একাধিক সিম রাখেন, তাদেরও সুযোগ দিতে চাই। এরপরও না হলে বাধ্য হয়ে অকার্যকর করে দেওয়া হবে সিম।
তিনি বলেন, এখন অনেক লোকবল দিয়েও যদি অপারেটররা কাজ সারতে চান, তাহলে তাদের সময়তো দিতে হবে। এটি চলমান প্রক্রিয়া। কাজ থেমে নেই। প্রতিদিন কাজ এগিয়ে চলেছে।
প্রশ্নের জবাবে তারানা বলেন, আমরা কোনো অনির্দিষ্ট সময় বেঁধে কাজ করতে চাই না। তাই ১৬ ডিসেম্বরে বায়োমেট্রিক্স চালুর সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতির পরে যাচাই-বাছাই হয়ে যাবে। তখন একটি সিমও কেন ফেক থাকবে, কার্যকর থাকবে নিবন্ধন ছাড়া? যদি থাকে জবাবদিহিতা থাকবে।
তিনি বলেন, কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যেন একটি অবৈধ সিমের জন্যও ভোগান্তিতে না পড়েন, তাই এ উদ্যোগ। গ্রাহকদের আশ্বস্ত করতেই এটি।
তবে বৈধভাবে কয়টি পর্যন্ত সিম রাখতে পারবেন একজন গ্রাহক, সে ব্যাপারে এখনো কোন সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আগে দেখতে চাই, চাহিদা কতোটা। কর্পোরেট প্রয়োজনীয়তায় অনেক সময় একাধিক সিম রাখেন কেউ কেউ। কিন্তু ৬ হাজারতো কোনোভাবেই থাকতে পারে না।
প্রশ্নের জবাবে বলেন, এক এনআইডি ব্যবহার করে এতো সিম কীভাবে হল, তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিষয়।
এ সময় মোবাইল অপারেটর প্রতিনিধি, এনআইডি প্রতিনিধি ছাড়াও মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।