বিকল্প পথে ফেসবুকে ‘সরকারবিরোধী অপপ্রচার’, ৩ যুবক আটক।

বিকল্প পথে ফেসবুকে ‘সরকারবিরোধী অপপ্রচার’, ৩ যুবক আটক।
বিকল্প উপায়ে ফেসবুক ব্যবহার করে ‘সরকারবিরোধী অপপ্রচার’ চালানোর অভিযোগে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে তিন যুবককে আটক করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। বৃহস্পতিবার তাদের আটক করা হয়।
আটক তিনজন হলো তৌহিদ হাসান (২১), তানভির আহমেদ (১৮) ও ফারুক ইসলাম(২২)।
র‍্যাবের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ‘বিকল্প থেকে অনলাইন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে রাষ্ট্র ও সরকারের জনকল্যাণমূলক কাজের অপপ্রচার এবং রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রম চালানোর অপরাধে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা হতে ফারুক ইসলাম, তানভির আহমেদ ও তৌহিদকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব-২।’
আটকের পর ওই তিনজনকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে র‍্যাব। এতে র‍্যাব ২-এর সহকারী পরিচালক জানান, আটক তিনজন ফেসবুকে আলবার্ট আইনস্টাইন, তাওহীদ হাসান নামে বিভিন্ন লিংক ব্যবহার করে হ্যাকিং করতেন। হ্যাক করা আইডিগুলোর তথ্য নিয়ে তারা সরকারবিরোধী অপপ্রচার চালাতেন।

জুম’আর নামাজের ফযীলত ও তা আদায়কারীদের জন্য ঘোষিত পুরষ্কার-

জুম’আর নামাজের ফযীলত ও তা আদায়কারীদের জন্য ঘোষিত পুরষ্কার-

রহমান রহীম আল্লাহ্‌ তায়ালার নামে-



 ১। কুরবানী করার সমান সওয়াব অর্জিত হয়ঃ

দিনে আগে ভাগে মসজিদে গেলে দান-খয়রাত বা পশু কুরবানী করার সমতুল্য সওয়াব পাওয়া যায়। আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত এক হাদীসে রাসুল (সাঃ) বলেছেন,
 “যে ব্যাক্তি জু’আর দিন ফরজ গোসলের মত গোসল করে প্রথম দিকে মসজিদে হাজির হয়, সে যেন একটি উট কুরবানী করল, দ্বিতীয় সময়ে যে ব্যাক্তি মসজিদে প্রবেশ করে সে যেন একটি গরু কুরবানী করল, তৃতীয় সময়ে যে ব্যাক্তি মসজিদে প্রবেশ করল সে যেন একটি ছাগল কুরবানী করল। অতঃপর চতুর্থ সময়ে যে ব্যাক্তি মসজিদে গেল সে যেন একটি মুরগী কুরবানী করল। আর পঞ্চম সময়ে যে ব্যাক্তি মসজিদে প্রবেশ করল সে যেন একটি ডিম কুরবানী করল। অতঃপর ইমাম যখন বেরিয়ে এসে মিম্বরে বসে গেলেন খুৎবার জন্য, তখন ফেরেশতারা লেখা বন্ধ করে খুৎবা শুনতে বসে যায়।” (বুখারীঃ ৮৮১, ইফা ৮৩৭, আধুনিক ৮৩০)

২। মসজিদের দরজায় দাঁড়িয়ে ফেরেশতারা অগ্রগামীদের নাম তালিকাভুক্ত করেনঃ

জুম’আর সালাতে কারা অগ্রগামী, ফেরেশতারা এর তালিকা তৈরি করে থাকেন। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,
“জুম’আর দিন মসজিদের দরজায় ফেরেশতা এসে হাজির হয়। সেখানে দাঁড়িয়ে তারা সর্বাগ্রে আগমনকারীদের নাম লিখতে থাকে। প্রথম ভাগে যারা মসজিদে ঢুকেন তাদের জন্য উট, দ্বিতীয়বারে যারা আসেন তাদের জন্য গরু, তৃতীয়বারে যারা আসেন তাদের জন্য ছাগল, চতুর্থবারে যারা আসেন তাদের জন্য মুরগী, ও সর্বশেষ পঞ্চমবারে যারা আগমন করেন তাদের জন্য ডিম কুরবানী বা দান করার সমান সওাব্ব লিখে থাকেন। আর যখন ইমাম খুৎবা দেওয়ার জন্য মিম্বরে উঠে পড়েন ফেরেশতারা তাদের এ খাতা বন্ধ করে খুৎবা শুনতে বসে যান।” (বুখারী ৯২৯, ইফা ৮৮২, আধুনিক ৮৭৬)

৩। দশ দিনের গুনাহ মাফ হয়ঃ

জুম’আর দিনের আদব যারা রক্ষা করে তাদের দশ দিনের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,
‘যে ব্যাক্তি ভালভাবে পবিত্র হল অতঃপর মসজিদে এলো, মনোযোগ দিয়ে খুৎবা শুনতে চুপচাপ বসে রইল, তার জন্য দুই জুম’আর মধ্যবর্তী এ সাত দিনের সাথে আরও তিনদিন যোগ করে মোট দশ দিনের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। পক্ষান্তরে খুৎবার সময় যে ব্যক্তি পাথর, নুড়িকণা বা অন্য কিছু নাড়াচাড়া করল সে যেন অনর্থক কাজ করল।’ (মুসলিমঃ ৮৫৭)

৪। জুম’আর আদব রক্ষাকারীর দশ দিনের গুনাহ মুছে যায়ঃ

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,
“জুম’আর সালাতে তিন ধরনের লোক হাজির হয়। (ক) এক ধরনের লোক আছে যারা মসজিদে প্রবেশের পর তামাশা করে, তারা বিনিময়ে তামাশা ছাড়া কিছুই পাবে না। (খ) দ্বিতীয় আরেক ধরনের লোক আছে যারা জুম’আয় হাজির হয় সেখানে দু’আ মুনাজাত করে, ফলে আল্লাহ যাকে চান তাকে কিছু দেন আর যাকে ইচ্ছা দেন না। (গ) তৃতীয় প্রকার লোক হল যারা জুম’আয় হাজির হয়, চুপচাপ থাকে, মনোযোগ দিয়ে খুৎবা শোনে, কারও ঘাড় ডিঙ্গিয়ে সামনে আগায় না, কাউকে কষ্ট দেয় না, তার দুই জুম’আর মধ্যবর্তী ৭ দিন সহ আরও তিনদিন যোগ করে মোট দশ দিনের গুনাহ খাতা আল্লাহ তায়ালা মাফ করে দেন।” (আবু দাউদঃ ১১১৩)

৫। প্রতি পদক্ষেপে এক বছরের নফল রোজা ও এক বছরের সারারাত তাহাজ্জুদ পড়ার সওয়াব অর্জিত হয়ঃ

যে ব্যাক্তি আদব রক্ষা করে জুম’আর সালাত আদায় করে তার প্রতিটি পদক্ষেপের বিনিময়ে তার জন্য পুরো এক বছরের রোজা পালন এবং রাত জেগে তাহাজ্জুদ পড়ার সওয়াব লিখা হয়।
আউস বিন আউস আস সাকাফী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,
“জুমা’আর দিন যে ব্যাক্তি গোসল করায় (অর্থাৎ সহবাস করে, ফলে স্ত্রী ফরজ গোসল করে এবং) নিজেও ফরজ গোসল করে, পূর্বাহ্ণে মসজিদে আগমন করে এবং নিজেও প্রথম ভাগে মসজিদে গমন করে, পায়ে হেঁটে মসজিদে যায় (অর্থাৎ কোন কিছুতে আরোহণ করে নয়), ইমামের কাছাকাছি গিয়ে বসে, মনোযোগ দিয়ে খুৎবা শোনে, কোন কিছু নিয়ে খেল তামাশা করে না; সে ব্যাক্তির প্রতিটি পদক্ষেপের জন্য রয়েছে বছরব্যাপী রোজা পালন ও সারা বছর রাত জেগে ইবাদত করার সমতুল্য সওয়াব।” (মুসনাদে আহমাদঃ ৬৯৫৪, ১৬২১৮)

৬। দুই জুম’আর মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহের কাফফারাঃ

জুম’আর সালাত জুম’আ আদায়কারীদের জন্য দুই জুম’আর মধ্যবর্তী গুনাহের কাফফারা স্বরূপ। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,
“পাঁচ বেলা সালাত আদায়, এক জুম’আ থেকে পরবর্তী জুম’আ, এক রমজান থেকে পরবর্তী রমজানের মধ্যবর্তী সময়ে হয়ে যাওয়া সকল (সগীরা) গুনাহের কাফফারা স্বরূপ, এই শর্তে যে, বান্দা কবীরা গুনাহ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখবে।” (মুসলিমঃ ২৩৩)

সূত্রঃ বই-প্রশ্নোত্তরে জুমু’আ ও খুৎবা
পরিমার্জনেঃ ডঃ মোহাম্মদ মনজুরে ইলাহী,
ডঃ আবু বকর মুহাম্মদ জাকারিয়া মজুমদার,
ডঃ মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।

আল্লাহর সাহায্য লাভের উপায়।

আল্লাহর সাহায্য লাভের উপায়।
বিশ্বের প্রতিটি সৃষ্টি আল্লাহতায়ালার সাহায্যের মুখাপেক্ষি। এ বিশ্বাস অন্তরে স্থাপন ঈমানের অংশবিশেষ। জীবন চলার পথে নানা সময়ে মানুষ বিভিন্ন সমস্যায় পতিত হয়। কষ্ট পায়, অসুস্থ হয়। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য মানুষ যেন আল্লাহর মুখাপেক্ষি হয়ে তার সাহায্য কামনা করে সমস্যামুক্ত হয়- সে পথ বলে দিয়েছেন। কোন পথে, কীভাবে মানুষ আল্লাহর সাহায্য কামনা করবে, সেই উপায় ও পথও আল্লাহ বলে দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘ তোমরা নামাজ ও সবরের (ধৈর্য) মাধ্যমে আমার (আল্লাহর) সাহায্য কামনা করো। নিশ্চয়ই খোদাভীরু ছাড়া এটা অবশ্যই কঠিন কাজ।’  বর্ণিত আয়াতে আল্লাহতায়ালা মানুষকে দুনিয়া ও আখেরাতের যাবতীয় কল্যাণের জন্য সবর ও নামাজের মাধ্যমে তার কাছে সাহায্য প্রার্থনার নির্দেশ দিচ্ছেন। এই আয়াতাংশ আমাদের উত্তমরূপে অনুধাবন করা প্রয়োজন। এই আয়াতের ব্যাখ্যায় আল্লামা আবু বকর আল জাসসাস ‘আহকামুল কুরআন’ তাফসিরে লিখেছেন, এর অর্থ আল্লাহ যা ফরজ করেছেন, সেসব ফরজ কাজ অত্যন্ত ধৈর্য-সহকারে আদায় করতে থাকা। আর তার হুকুম অমান্য করা থেকে বিরত থাকা।  আয়াতে নামাজের পাশাপাশি এসেছে সবরের কথা। পবিত্র কোরআনে সবর শব্দটির অর্থ ব্যাপক। হাদিসে এর ব্যবহার এসেছে ব্যাপক অর্থে। যেমন কোথাও এসেছে ধৈর্যধারণ অর্থে; যেমন হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিস। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে মুসলমান মানুষের সঙ্গে একাত্ম ও একত্র হয়ে বসবাস করে এবং তাদের সদ্ভাব ও যন্ত্রণায় ধৈর্যধারণ করে, সে ব্যক্তি ওই মানুষের চেয়ে উত্তম, যে অন্যের সঙ্গে মেলামেশা করে না....।’  কোথাও সবর এসেছে দৃঢ়তা অর্থে; যেমন হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘হে লোক সকল! তোমরা শত্রুর সঙ্গে যুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা করো না, আল্লাহর কাছে নিরাপত্তার প্রার্থনা করো। কিন্তু যখন শত্রুর সম্মুখীন হও, তখন ধৈর্য ও দৃঢ়তা প্রকাশ করো।  আসলে সবর এমন একটি শব্দ যা নির্দিষ্ট কোনো প্রতিশব্দে প্রকাশ করা বা বুঝানো কঠিন। এ শব্দটি যেসব ব্যঞ্জনাময় অর্থ প্রকাশ করে তার মধ্যে রয়েছে-  ১. পরিপূর্ণতা বিধানের জন্য সহিষ্ণুতা, অধীর না হওয়া। ২. সহিষ্ণুতা, অধ্যাবসায়, দৃঢ় সংকল্প, স্থিরতা- উদ্দেশ্য সাধনে কঠিন হওয়া। ৩. আকস্মিক বা দৈব কার্যকরণের বিপরীতে সুবিন্যস্ত বা প্রণালীবদ্ধভাবে কার্য সম্পাদন করা। ৪. দুঃখ, পরাজিত বা ভোগান্তি অবস্থায় বিরক্ত ও বিদ্রোহী মনোভাবাপন্ন না হয়ে এসব অবস্থা স্বাভাবিকভাবে গ্রহণপূর্বক আল্লাহর ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্প

এতিম ও বিধবার প্রতি ইসলাম।

এতিম ও বিধবার প্রতি ইসলাম।
ইসলামপূর্ব যুগে এতিম ও বিধবাদের কোনো অধিকার সমাজে প্রতিষ্ঠিত ছিল না। বাবা মারা যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অসহায় সন্তানদের প্রতি শুরু হতো অত্যাচার-অবিচার ও জুলুম-নিপীড়ন। তাদের অধিকার দেওয়া তো হতোই না, বরং এতিম শিশুদের জন্য বাবার রেখে যাওয়া সম্পদ কেড়ে নেওয়ার জন্য শুরু হতো ষড়যন্ত্র। অনুরূপভাবে স্বামী মারা যাওয়ার পর বিধবা স্ত্রী মানুষের কটু কথার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতো। স্বামীহারা অসহায় নারী অপমান ও লাঞ্ছনার শিকার হয়ে জীবন-যাপন করত। এতিমদের অধিকার ও মর্যাদা পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন জায়গায় উল্লেখ হয়েছে। তাদের ধন-সম্পদ বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য জোর তাগিদ দেওয়া হয়েছে। তাদের অধিকার নিয়ে কেউ যেন অবহেলা না করে সে জন্য বার বার সতর্কবাণী উচ্চারিত হয়েছে। ইরশাদ হচ্ছে- ‘এতিমদের তাদের সম্পদ বুঝিয়ে দাও। খারাপ মালামালের সঙ্গে ভালো মালামালের অদলবদল করো না। আর তাদের ধন-সম্পদ নিজেদের ধন-সম্পদের সঙ্গে সংমিশ্রণ করে তা গ্রাস করো না। নিশ্চয় এটা বড়ই মন্দ কাজ।’ সূরা নিসা, আয়াত ২। এই আয়াতে এতিমদের তাদের সব ধরনের অধিকার ও পাওনা বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য আদেশ দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে এতিমদের সম্পদ নিজের সম্পদের সঙ্গে মিলিয়ে ভোগদখলের দুরভিসন্ধি করতে নিষেধ করা হয়েছে। অবশ্য যদি কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তি বা অভিভাবক এতিমদের উপকারের উদ্দেশ্যে নিজের মালামালের সঙ্গে এতিমদের মালামাল মিলায় তাহলে তা বৈধ। পবিত্র কোরআনের অন্য আয়াতে এতিমদের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাসকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারিত হয়েছে। মহান আল্লাহ বলছেন, ‘যারা এতিমদের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে খায়, তারা নিজেদের পেটে আগুনই ভর্তি করছে এবং সত্বরই তারা অগ্নিতে প্রবেশ করবে।’ সূরা নিসা, আয়াত ১০। বিখ্যাত হাদিস বিশারদ সাহাবি হজরত আবু হোরায়রা রা.  বলেন, বিধবা ও অসহায়দের যারা অভিভাবক হবে এবং দায়-দায়িত্ব পালন করবে তাদের সম্পর্কে রসুল সা. বলেন, ‘বিধবা ও অসহায়দের তত্ত্বাবধানকারী ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় জেহাদকারীর মতো’ হাদিস বর্ণনাকারী সাহাবি বলেন, আমার ধারণা রসুল সা. এও বলেছেন যে, (বিধবা ও অসহায়দের তত্ত্বাবধানকারীর মর্যাদা) ওই ব্যক্তির মতো, যে অলসতা না করে সারারাত জেগে ইবাদত করে এবং ধারাবাহিকভাবে প্রতিদিন রোজা রাখে। বুখারি ও মুসলিম। হাদিসে ইরশাদ হচ্ছে- ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কোনো এতিমের মাথায় হাত বুলাবে যেসব চুলের ওপর দিয়ে তার হাত অতিক্রম করবে এর প্রতিটির বিনিময়ে তার জন্য সোয়াব লেখা হবে। মুসনাদে আহমদ, তিরমিজি।

নামের প্রথম অক্ষর দিয়ে প্রিয় মানুষের ব্যক্তিত্ব জানার সহজ উপায় !

নামের প্রথম অক্ষর দিয়ে প্রিয় মানুষের ব্যক্তিত্ব জানার সহজ উপায় !
 আপনার কি জানা আছে, আপনার ব্যক্তিত্বে বিশেষ প্রভাব ফেলে আপনার নামের প্রথম অক্ষর। তাহলে জেনে নিন,আপনার নামের প্রথম অক্ষর কী ভাবে আপনার ব্যক্তিত্বকে প্রভাবিত করে জেনে নিন।



A– যদি কোনও মেয়ে বা ছেলের নাম ইংরেজির A অক্ষর দিয়ে শুরু হয়, তা হলে এমন ব্যক্তি খুবই আকর্ষক হয়ে থাকেন। এই অক্ষরের ব্যক্তিরা ভালোবাসা এবং যে কোনও সম্বন্ধকে খুব গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। কিন্তু এঁরা খুব বেশি রোম্যান্টিক হন না। সমস্ত কিছুই এঁরা খুব দেরিতে পান। বহু বাধা অতিক্রম করে সেই সমস্ত জিনিস লাভ করেন তাঁরা। কিন্তু সাফল্য পেতে শুরু করলে এঁদের পিছনে ফিরে তাকাতে হয় না। সাফল্যের চূড়ায় থাকেন এঁরা। জীবনে সংঘর্ষ করতে হয়। কিন্তু অবশেষে নিজের লক্ষ্য জয় করেন। এঁদের মনের জোড় খুব একটা না-থাকলেও, দরকারের সময়ে এঁরা অপ্রত্যাশিত কাজ করে ফেলেন। তবে এঁরা রাগী মেজাজের। এঁরা লোকেদের সঙ্গে দেখা করতে এবং অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পছন্দ করেন। পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন।

B– এই অক্ষর দিয়ে যাঁদের নাম শুরু হয়, তাঁরা খুবই সংবেদনশীল। ছোট-ছোট কথাও তাঁদের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। আবার ছোট-ছোট কথাতেই এঁরা খুশি হয়ে যান। এরা ভুল থেকে শিক্ষা নেন এবং নিজেকে শুধরানোর চেষ্টা করেন। B অক্ষরের নামের ব্যক্তিরা খুব রোম্যান্টিক। B অক্ষরের লোকেরা সাধারণত প্রেম বিবাহ করে থাকেন। বাহ্যিক সৌন্দর্য এঁদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। টাকাকেও গুরুত্ব দিয়ে থাকেন এঁরা। সাধারণত সাহসী। তাই এই অক্ষরের লোকেরা সাধারণত সেনা বা বিপদসঙ্কুল ক্ষেত্রে চাকরি করেন। নিজের পরিশ্রমের ওপর সম্পূর্ণ বিশ্বাস রাখেন। সাধারণত এই অক্ষর দিয়ে যাঁদের নাম, তাঁরা ধনী হয়ে থাকেন। তবে মুডি স্বভাবের কারমে অনেকে তাঁদের অহংকারী মনে করে থাকেন। খুব একটা বন্ধু বান্ধব থাকেন না। তবে কোনও বন্ধু থাকলে তাঁর সঙ্গে খুব গভীর সম্পর্ক রাখেন এঁরা।

C– এঁরা সকলের সঙ্গে ঘোলামেলা করতে পারেন। সব সময় হাসি-খুশি থাকেন। এঁরা ভাবুক স্বভাবের। এঁরা স্পষ্টবক্তা। তবে ইচ্ছা করে কাওকে কষ্ট দেন না। ভালোবাসায় এঁদের অগাধ বিশ্বাস। এই অক্ষর দিয়ে যাঁদের নাম, তাঁরা ভালো দেখতে হন। যে কেরিয়ারই বাছুন না-কেন, উন্নতি অনিবার্য। অর্থাভাবে থাকেন না।

D– যে কোনও মূল্যে নিজের পছন্দের জিনিস হাসিল করে থাকেন এঁরা। কাজের প্রতি একনিষ্ঠ। আপসহীন হন। লক্ষ্যে না-পৌঁছনো পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে যান। তাই এঁরা জেদিও হয়ে থাকেন। পরিশ্রমী হন। সরস্বতী এবং লক্ষ্মী– উভয়ের আর্শীবাদ পান এঁরা। এঁরা নতুন কিছু করতে চান। এঁদের কাছ থেকে অবশ্যই কিছু না-কিছু শেখা যায়। জেদি হওয়ায় অনেকে এঁদের অহংকারী মনে করেন।

E– এই অক্ষর দিয়ে যাঁদের নাম শুরু হয় তাঁরা খুব বেশি কথা বলেন। হাসি-ঠাট্টা করে থাকেন খুব। তবে বেশি কথা বলার কারণে সবসময় সমস্যায় পড়ে যান। এঁরা যেমন ব্যবহার করেন, তেমনই ব্যবহার আশা করে থাকেন। তা না-হলে কড়া কথা শুনিয়ে দেন। এর খুব বেশি চিন্তা-ভাবনা করেন না। চাহিদা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী শিক্ষা, ব্যবসা এবং অর্থের অধিকারী হন। এঁরা সবসময় হাসিখুশি থাকেন। এঁদের সকলেই খুব পছন্দ করে।

F– এই অক্ষর দিয়ে যাঁদের নাম শুরু হয়, তাঁদের জীবনে ভালোবাসার স্থান সর্বোপরি। এঁরা প্রয়োজনের বেশি ভাবুক হয়। এই অক্ষরের নামের লোকেরা লেখক হয়ে থাকেন। যেখানে যান, সেখানে সকলকে আপন করে নেন। এঁরা খুব আকর্ষক এবং রোম্যান্টিক। এঁরা সহজেই সকলকে সাহায্য করে থাকেন। খুব আত্মবিশ্বাসী। জীবনে সমস্ত কিছুর মধ্যেই ভারসাম্য বজায় রাখেন এঁরা।

G– এই অক্ষরের নামের ব্যক্তির মন খুব পরিষ্কার। তাই অনেক সময় সমস্যার সম্মুখীন হন এঁরা। একই ভুল বার বার করেন না। ভুল থেকে শিক্ষা নেন। এঁদের বন্ধুর সংখ্যা কম, শান্তিপ্রিয়, আত্মবিশ্বাসী। কিন্তু রেগে গেলে কারও কথা শোনেন না। কম কথা বলেন।

H– এই অক্ষরের নামের লোকেরা খুব সংবেদনশীল। নিজের মনের কথা কারও সামনে প্রকাশ করেন না। এমনকি দুঃখে বা আনন্দেও কাউকে কিছু বলেন না। এই অক্ষরের নামের ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব খুবই রহস্যময়। নিজের সম্মান নিয়ে খুব চিন্তিত থাকেন। যাঁদের নাম H অক্ষর তাঁরা খুব বুদ্ধিমান হন। এঁরা সাধারণত রাজনীতি এবং প্রশাসনিক ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত থাকেন। কারও প্রতি নিজের ভালোবাসা সহজে ব্যক্ত করেন না। কিন্তু কাউকে ভালোবাসলে মন-প্রাণ দিয়ে ভালোবাসেন। বৈবাহিক জীবন সুখী হয়। কারও সঙ্গে বন্ধুত্বও করেন না এবং কারও সঙ্গে শত্রুতাও করেন না। খুব অর্থ উপার্জন করেন।

I– এই ব্যক্তিরা শুধুমাত্র ভালোবাসার ভাষা বোঝেন। ভালোবাসা দিয়েই তাঁদের মন জয় করা যায়। এঁরা খুব ভাবুক। এঁরা মাথা দিয়ে কোনও কিছু ভাবেন না। মনের কথা শোনেন। তাই অনেকেই এঁদের সহজে বোকা বানিয়ে দেয়। সবসময় মনের কথা শোনার জন্য অনেক কিছুই হারিয়ে থাকেন এঁরা। জীবনে অনেক কিছু পেয়ে থাকলেও, তার সুখ কমই ভোগ করতে পারেন। শিক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষ জ্ঞান রাখেন। অর্থাভাব হয় না। বিদেশ যাওয়ার সুযোগ পান।

J– সম্বন্ধের প্রতি সত্‍‌ এবং বিশ্বস্ত। শরীরের পাশাপাশি এঁদের মনও খুব সুন্দর হয়। খুব নখরবাজ। বাছবিচার রাখেন। যা চান তাই নিজের জোরে হাসিল করে থাকেন। টাকা, সম্মান এবং ভালোবাসা– সবই এঁদের কাছে থাকে। জীবনে খুব উন্নতি করেন। এই অক্ষর দিয়ে যাঁদের জীবনসঙ্গীর নাম, তাঁরা খুব ভাগ্যশালী।

K– এঁরা খুব ঠোঁটকাটা। যা মনে থাকে তাই বলে দেন। কোনও কথা বলার আগে কিছু ভাবেন না। নিজের ব্যাপারে ভাবতে পারেন। নিজের লাভের জন্য যে কোনও পর্যায়ে যেতে পারেন। অনেক অর্থ উপার্জন করেন। কিন্তু মান-সম্মানের তোয়াক্কা করেন না। এঁদের সকলেই ভয় পায়। এই অক্ষর দিয়ে যাঁদের নাম, তাঁদের বেশির ভাগই ব্যবসায়ী হয়ে থাকেন। ঝুঁকি নিতে ভালোবাসেন। এঁরা দেখতে খুব সুন্দর। অনেকেই এঁদের প্রতি আকর্ষিত হন। বাহ্যিক সৌন্দর্য পছন্দ করেন।

L– ভালোবাসা এবং রোম্যান্সই এঁদের কাছে সব। সব কথাই মন দিয়ে ভাবেন। যে কোনও সম্পর্ককে খুব গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। কাউকে কষ্ট দেন না। ছোট ছোট জিনিসেই এঁরা খুশি থাকেন। সমাজ এবং পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সাফল্য লাভ করেন। সবসময় হাসি-খুশি থাকেন এঁরা। সাহিত্যকে কেরিয়ার হিসেবে বেছে নেন। অর্থাভাব হয় না।

M- এঁরা খুব ভাবুক স্বভাবের। সব সময় গভীর চিন্তা-ভাবনায় ডুবে থাকেন। এ কারণে এঁরা অন্যের জন্য ঘাতক প্রমাণিত হতে পারেন। তাই এমন ব্যক্তিকে কখনও বিরক্ত করবেন না। কোনও কিছু একবার ধরে নিলে এঁরা সহজে ছাড়তে চান না। ভাগ্য এঁদের সঙ্গে থাকেন। তাই অর্থ এবং সম্মান– দুই-ই এঁদের হাতের মুঠোয় থাকে। এই অক্ষর দিয়ে যাঁদের নাম শুরু হয়, তাঁরা রাজনৈতিক ক্ষেত্রকে নিজের কেরিয়ার হিসেবে নির্বাচিত করেন। এঁরা সুবক্তা এবং লেখক।

N- আপনি আবেগপ্রবণ৷ সম্পর্কের গভীরতা বোঝেন৷সবকিছুতেই নিজের হাত পাকাতে পছন্দ করেন৷

O- স্বাভাবের দিক থেকে হাসিখুশি ও মজাদার হলেও সিরিয়াসলি কাজ করে টাকা জমাতে আপনি পছন্দ করেন৷ অতিরিক্ত পজেসিভনেস আপনার সমস্যার কারণ হয়ে উঠতে পারে৷

P- সামাজিকতা ও স্টেটাস সম্পর্কে আপনি খুব সচেতন৷ আপনার পার্টনার সুন্দরী ও ইন্টেলিজেন্ট হওয়াই কাম্য৷

Q- সবসময় নিজেকে কাজের মধ্যে রাখতে ভালোবাসেন৷অন্যের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে থাকা আপনার পছন্দের৷সাদা ফুল আপনার খুব পছন্দের৷

R- নিজেকে সবসময় সেরা প্রমাণ করার তাগিদ রয়েছে আপনার ভিতর৷

S- আদর্শবাদী, রোমান্টিক এবং একইসাথে আপনি সংবেদনশীল৷কথা দিয়ে কথা রাখতে পছন্দ করেন৷

T- আপনি খুব সংবেদনশীল৷ ব্যক্তিগত স্পেসে কাউকে ঢুকতে দেন না৷প্রেমে পড়লেও খুব একটা অনুভূতি প্রকাশ আপনার পছন্দ নয়৷

U- প্রেম আপনার কাছে একটা চ্যালেঞ্জ৷ তাই প্রেমহীন জীবনের কল্পনাও আপনি করতে পারেন না৷অন্যকে উপহার দিতে ভালোবাসেন৷

V- অত্যন্ত স্বাধীনচেতা৷ সম্পর্কে স্পেস পছন্দ করেন৷কখনও কখন একটু ছটফটে৷

W- অত্যন্ত অহংকারী৷ প্রেমের ব্যাপারে চট করে মুখ খুলতে চান না৷ইগো আপনার বড় সমস্যা৷ প্রেমিক হিসেবে খুব একটা বিশ্বস্ত নন৷

X- অল্পেতেই বোর হয়ে যান৷একসঙ্গে দুটো কাজ অনায়াসে করতে পারেন আপনি৷

Y- কোনো কিছু আপনার মনের মতো না হলে তক্ষুণি আপনি তা ছেড়ে দেন৷প্রতিযোগিতার দৌড়ে সামিল হওয়া আপনার পছন্দের৷

Z- অত্যন্ত রোমান্টিক৷ প্রেমিকাকে আগলে রাখাই আপনার জীবনের মূল লক্ষ্য।

বাংলাদেশেও শুরু হচ্ছে ‘আওয়ার অব কোড’

বাংলাদেশেও শুরু হচ্ছে ‘আওয়ার অব কোড’
বাংলাদেশে প্রোগ্রামিং শিক্ষায় উৎসাহ দিতে ‘আওয়ার অব কোড’ আয়োজন করতে যাচ্ছে কোডারসট্রাস্ট বাংলাদেশ। আগামী ৭ থেকে ১৩ই ডিসেম্বর এক সপ্তাহব্যাপী এ আয়োজন চলবে। প্রোগ্রামিং শেখার জন্য সারা বিশ্বে ‘আওয়ার অব কোড’ আয়োজনটি পরিচিত।

বিশ্বব্যাপী ‘আওয়ার অব কোড’ ছড়িয়ে দিতে উদ্যোগ নিয়েছেন মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস, ফেসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ, শান্তিতে নোবেল বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই থেকে শুরু করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা পর্যন্ত। বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকও আওয়ার অব কোড ছড়িয়ে দিতে দেশে কাজ করছেন।
বাংলাদেশে আওয়ার অব কোড ছড়িয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে কোডারসট্রাস্টের সহ-প্রতিষ্ঠাতা জন-কায়ো ফেবিগ বলেন, ‘আওয়ার অব কোড প্রোগ্রামটি  সবার জন্য উন্মুক্ত। সবাইকে কোড শিখতে উৎসাহ দিতে বাংলাদেশে এ কর্মসূচি চালু করছে কোডারসট্রাস্ট। প্রোগ্রামটিতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের তরুণ শিক্ষার্থীরা শিক্ষা ও অনলাইন চাকরির বাজারে নিজেদের পরিচয় ঘটিয়ে জীবনযাত্রার মান পরিবর্তন করতে পারবে বলে আশা করি।’
কোডারসট্রাস্ট প্রসঙ্গে ফেবিগ বলেন, এটি ডেনমার্ক প্রতিষ্ঠান। গত দুই বছর ধরে বাংলাদেশে তরুণ মেধাবীদের তথ্যপ্রযুক্তিতে প্রশিক্ষণ দিতে কাজ করছে। বাংলাদেশে আওয়ার অব কোডের মতো উদ্যোগ চালু করে দেশের তরুণদের কোড শেখার প্রতি আরো উৎসাহ দিতে চায় কোডারসট্রাস্ট।

গত এক দশকে ফ্রিল্যান্সিং জগতের বড় ধরনের অগ্রগতি বিবেচনায় ফেবিগ বলেন, ‘বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ফ্রিল্যান্সিং প্রতিভাধরদের মানের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করছে। কোডারসট্রাস্ট মনে করে বয়স, লিঙ্গ বা আর্থসামাজিক ভেদাভেদ ভুলে প্রতিটি বাংলাদেশির অনলাইন মার্কেটপ্লেসে কাজ করে স্বনির্ভর হওয়ার সুযোগ আছে। তিন মাসেরও কম সময়ে নিজের ইচ্ছাশক্তি আর দৃঢ়তা দিয়ে কোড শেখা যায়।
বাংলাদেশে আওয়ার অব কোডের মূল আয়োজক কোডারসট্রাস্টের পাশাপাশি সহযোগী হিসেবে রয়েছে মাইক্রোসফট বাংলাদেশ এবং পার্টনার হিসেবে রয়েছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ব্র্যাক ডট নেট, বিডি জবস, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এবং জাগো ফাউন্ডেশন।
যেভাবে অংশ নেওয়া যাবে
‘আওয়ার অব কোড’ সবার জন্য উন্মুক্ত। এতে অংশ নিতে (www.coderstrust.com/hourofcode) ওয়েবসাইটে যেতে হবে। এখানে আওয়ার কোড অনুষ্ঠানের স্থান ও অনুষ্ঠান সম্পর্কে জানা যাবে।

বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম বন্ধের ‘বিরুপ প্রভাব’ সারা বিশ্ব জুড়েই !

বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম বন্ধের ‘বিরুপ প্রভাব’ সারা বিশ্ব জুড়েই !


বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ থাকার দরুন ‘বিরুপ প্রভাব’ পড়েছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেও ।  সারাবিশ্বে বিভিন্ন দেশে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশীরা নানা কারনে দেশের মানুষের সাথে যোগাযোগ রক্ষার সবচেয়ে বড় মাধ্যম হিসেবে ইন্টারনেটকে ব্যাবহার  করতো । আকস্মিক সরকারী সিদ্ধান্তে বাংলাদেশে ইন্টারনেটের উপড় ‘ কড়াকড়ি’ ঘোষনার পর থেকে কার্যত অনেকটাই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ সহ, বিভিন্ন ব্যাবসা বানিজ্যের পথ । এরপরেও ‘ বিকল্প পথে অনেকেই ইন্টারনেটের  ব্যাবহার করলেও, সেই সংখ্যা অনেক কম। সরকারের এমন সিদ্ধান্তের পর অনেকেই এই বিষয়টিকে সাধুবাদ জানালেও সমালোচনার সংখ্যাটাই মুলত অনেক বেশি ।ঢাকার একটি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে অনার্স করছেন নেহা। পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে নিজের খরচ বের করতে অনলাইনে বসে  ই-কমার্সে গত দুবছর ধরে ব্যবসা শুরু করেছেন। খুব বেশি পুঁজি নেই, ফেসবুকে খোলা একটি পেইজের মাধ্যমেও চলে তার বিভিন্ন পন্যের অর্ডার নেয়া ও ডেলিভারি করার কাজ ।অনেক চেষ্টায় পেইজটিতে লাইক পড়েছে প্রায় তিন লাখ। ডলার খরচ করে পেইজটির বিজ্ঞাপণ চালিয়েছেন দিনের পর দিন।  শাড়ি, থ্রি-পিছসহ মেয়েদের অত্যাধুনিক পোশাকের সমাহারও ছিল পেইজটিতে। ছবির সঙ্গে জুড়ে দেয়া দাম। তার নিচে দেয়া মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করে অর্ডার দিলে ক্রেতার ঠিকানায় পৌঁছে যেতো পণ্য। পড়াশোনার পাশাপাশি এই ব্যবসা থেকে যা আয় হতো তা দিয়ে দুজন ডেলিভারি ম্যানের খরচসহ নিজের পড়াশোনার খরচটাও বেশ ভালো চলে যেত ।  কিন্তু গত ১৫ দিন ধরে দারুন অসহায় সময় কাটছে তার। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। সেই সঙ্গে বন্ধ হয়ে গেছে নেহার ভার্চুয়াল স্টোরটিও

নেহার মতো এমন প্রায় কয়েক হাজার তরুন উদ্যোক্তা আছেন যাদের ব্যবসার মূল প্লাটফর্মই হচ্ছে ফেসবুক। নিজের  ওয়েবসাইট থাকলেও  পণ্যের প্রচার ও প্রসারের জন্য ফেসবুকটাই আসলে মুল মাধ্যম।  সেই হিসেবে, ই-কমার্সে মন দিয়েছেন এমন কেউ নেই যে, ফেসবুক বন্ধ হয়ে যাওয়া ক্ষতির মুখে পড়তে হয়নি তাদের।

    বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ই-কমার্স একেবারে নতুন না হলেও খুব পুরোনো নয়। তবে ইদানিংকালে ধীরে ধীরে অনলাইন কেনাবেচা জনপ্রিয় হচ্ছে। ঘরে বসে কেনাকাটা যাচ্ছে। সময় বেঁচে যাচ্ছে। শত ব্যস্ততার মধ্যেও প্রয়োজন সেরে নেয়া যাচ্ছে, আঙুলের ছোঁয়ায়। এটা তো কম কিছু নয়। নগর জীবন, বিশেষ করে ঢাকাবাসীর জন্য উপযোগী অনলাইন কেনাকাটা।

বর্তমানে আন্তঃসীমান্ত ব্যবসা ছাড়াও ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি উদ্যোক্তাদের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ ফেসবুক নিষেধাজ্ঞা।

গতকাল বৃহস্পতিবার সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক গালফ নিউজ বাংলাদেশে ফেসবুক বন্ধের বিরুপ প্রতিক্রিয়া নিয়ে এ-সংক্রান্ত একটি খবর প্রকাশ করেছে।
পশ্চিমবঙ্গের ব্যবসায়ী সাইফুর রহমানের বরাত দিয়ে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, ‘আমার ঢাকায় দোকান আছে। কলকাতা থেকে বিভিন্ন পণ্য-সামগ্রী কিনে প্রতি সপ্তাহে সেখানে পাঠাই। তাদের কী প্রয়োজন সেটা জানার জন্য আমি পুরোপুরি হোয়াসঅ্যাপের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু এ নিষেধাজ্ঞার ফলে আমি অসহায় হয়ে পড়েছি এবং এটা আমার কাজের ক্ষতি করছে।’ অনেকেই বলছেন, তাদের সামাজিক ও পারিবারিক জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
কলকাতার গৃহবধূ নিরূপা রায় বলেন, ‘ভারতের একটি প্রতিষ্ঠানে আমার স্বীমা কাজ করেন এবং একবার বাংলাদেশে গিয়ে টানা কয়েক সপ্তাহ থাকতে হয়। যোগাযোগের অসুবিধায় আমরা একেবারে অসহায় হয়ে পড়েছি।’

অন্যদিকে, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ গালফ নিউজকে বলেন, ‘সরকার যখন নিরাপদ মনে করবেন তখনই এসব সেবা চালু করা হবে।’

ঢাকার একজন ব্যবসায়ীর উদ্ধৃতি দিয়ে গালফ নিউজ জানায়, ‘আমরা চামড়ার ব্যাগসহ বিভিন্ন পণ্য তৈরি করি। এর অর্ডার আসে ফেসবুক পেইজ থেকে। বর্তমানে সেই ব্যাবসায় চরম মন্দা চলছে ’

    এ পর্যন্ত ৭ থেকে ৯ টি সামাজিক যোগাযোগের অ্যাপস বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ফেইসবুক, ভাইবার, হোয়াটসএ্যাপ, ট্যাংগো, হ্যাঙ্গআউট, ইউস্টার্ন ডট টিভি, কমিউর, লাইন। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এসব যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে। এ নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের মধ্যে পক্ষে- বিপক্ষে তীব্র আলোচনা-  সমালোচনার যেমন জন্ম দিয়েছে, তেমনি প্রযুক্তিবিদরাও এ সিদ্ধান্তের প্রতি দ্বি-মত পোষণ করেছেন। প্রযুক্তিবিদরা মনে করছেন, এ ধরনের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সরকারের যে লক্ষ্য তা পূরণ হবে না এবং কোনো সমাধানও আসবে না। এটাও বিবেচনায় রাখতে হবে, একদিন না একদিন তো এসব যোগাযোগ মাধ্যম খুলতে হবে। তখন কি হবে? সরকার যে আশঙ্কায় এগুলো বন্ধ করেছে, তা কি নির্মূল হয়ে যাবে? সন্ত্রাসী বা জঙ্গি গোষ্ঠী কি এসব এ্যাপস ব্যবহার বন্ধ করে দেবে?
    বিটিআরসি’র হিসাব মতে, দেশে সক্রিয় ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৫ কোটি ৪০ লাখ। এর মধ্যে শুধু ফেইসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১ কোটি ৭০ লাখ। বাকিরা অন্যান্য মাধ্যম ব্যবহার করছে। এই বিপুল সংখ্যক ব্যবহারকারী বিশেষ করে সংখ্যাগরিষ্ঠ তরুণ প্রজন্ম মনে করছে, এটা তাদের অবাধ তথ্য আদান-প্রদান ও মতামত প্রকাশের মতো মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ। বিশ্বজুড়ে ভয়ংকর জঙ্গি সংগঠন আইএস তার বেশিরভাগ কার্যক্রম ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার করে যাচ্ছে। বিশ্বের ক্ষমতাধর ও সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তির দেশগুলো তো সেসব যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করতে পারছে না বা বন্ধ করার কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। কারণ, তারা জানে, প্রযুক্তির এ যুগে তা বন্ধ করা সম্ভব নয়। এক পথ বন্ধ করলে অসংখ্য পথ বের হয়ে যায়।  প্রযুক্তিবিদরা মনে করছেন, প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ প্রযুক্তি দিয়েই মোকাবিলা করতে হবে। কোনো এ্যাপস বন্ধ করে নয়।

প্রসঙ্গত, গত  ১৮ নভেম্বর নিরাপত্তার স্বার্থে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ, ম্যাসেঞ্জার বন্ধ দেয় বাংলাদেশ সরকার। ২১ নভেম্বর রাতে যুদ্ধাপরাধী বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদকে ফাঁসি কার্যকর করা হয়।-