ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে গেলে যে বিষয়গুলো আপনাকে মেনে চলতে হবে…১. ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে গেলে প্রথমেই অনেক বড় ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হবে, আমি আবার বলছি অনেক বড় ধৈয্য দরকার, আমি আবার বলছি অনেক বড় ধৈর্য্য দরকার, ৩ বার বললাম ধৈর্যের গুরুত্ব বুঝানোর জন্য, এমন মানসিকতা নিয়েই কাজ শেখা শুরু করতে হবে ।
২. প্রথমেই যে কোনো মার্কেট প্লেসে একাউন্ট করার দরকার নেই, কাজ শেখার পরে একাউন্ট করতে পারেন, odesk, freelancer পৃথিবীর সবচেয়ে পপুলার আউট সোর্সিং মার্কেট প্লেস, এরপরে এখন fiverr এও চেষ্টা করতে পারেন ।
৩. কখনোই মনে করা যাবেনা ফ্রিল্যান্সিং শুরু করেই রাতারাতি বড় লোক হয়ে যাব, আঙ্গুল ফুলে কলা গাছের মত
।
৪. অনলাইনে আয় করার অনেক পথ আছে, আপনি ফ্রিল্যান্সিং করতে গিয়ে ভাবতে পারবেননা এ পথে সফল হওয়া অসম্ভব। তাহলেই কাজের শুরুতেই আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবেন ।
৫. কোনো মার্কেট প্লেসে একাউন্ট করে আপনি সাথে সাথে কাজ পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী হবেন এটা স্বাভাবিক কিন্তু কাজ না পেলে আশাহত হয়ে বিড করা ছেড়ে দিবেন এমন ভাবনা মন থেকে বাদ দিন, কারন অনেকে কিছু দিনের মধ্যেই কাজ পায়, আবার অনেকে ৬ মাস এক নাগারে চেষ্টা করার পরে কাজ পায়, আমি কিছু দিন আগে এক লোকের ফেসবুক স্টাট্যাস পড়ে ছিলাম, সে এক নাগারে ৬ মাসের মত বিড করতে থেকেছে, মাঝে মাঝে কিছু ক্লাইন্ট রিপ্লে দিয়েছে কিন্তু কাজ পায় নি, কাজ পেয়েছে ৬ মাস পরে, কিন্তু ঐ ৬ মাস পরে যে ক্লান্টের কাজ শুরু করেছে তার কাজ ২ বছর যাবৎ করতেছে, তাই আবার ক্লান্ট মেসেজ করলেই কাজ পেয়ে গেলেন, আবার ইনভাইট পেলেই কাজ পেয়ে গেলেন এটা ভাবা যাবে না ।
৬. আপনি কাজের জন্য যে বিড করবেন তা যেন গ্রহণযোগ্য হয়, মিনিমাম ৩-৫ ডলার রাখুন আওয়ার লি রেইট আর সর্বোচ্চ রেইট আপনার কাজের দক্ষতা অনুযায়ী দিবেন, মিনিমাম রেইট এর নিচে দিলে আপনার মাধ্যমেই মার্কেট খারাপ হয়ে যাবে এটা নিশ্চিত । অবশ্য এখন এই রেইটটাই ডিফল্ট হিসেবে গন্য । কোন একটা কাজ অনলাইন মার্কেটপ্লেসে আসার পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেটিতে আবেদন করতে হবে। তবে আবেদন করার সময় কাভার লেটারটি এমনভাবে লিখবেন, যেন বায়ার দেখে বুঝতে পারে যে আপনি কাজটির বর্ণনা পড়েছেন এবং তা করতে পারবেন।
৭. আপনি যত বেশি অনলাইন মার্কেটপ্লেসে থাকবেন, ততই আপনার কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে। কারণ এমন অনেক কাজ আছে যেগুলো মার্কেটপ্লেসে আসার সঙ্গে সঙ্গেই সম্পন্ন করে জমা দিতে হয়। যেমন- হঠাৎ করে কোন একটি ওয়েবসাইটে সমস্যা হয়েছে তা ঠিক করে দেওয়া ইত্যাদি।
৮. প্রথমদিকে বেশি সময় অনলাইনে থাকার চেষ্টা করুন, যাতে বায়ার আপনাকে যে কোন বার্তা পাঠালে সঙ্গে সঙ্গেই আপনি তার জবাব দিতে পারেন। তাহলে বায়ার বুঝবে, আপনি কাজের প্রতি আন্তরিক।
৯. অনলাইন মার্কেটপ্লেসে দেখা যায়, প্রতি মিনিটেই সেখানে নতুন নতুন কাজ আসে সেগুলোতে আবেদন করুন। যদি দেখা যায় ঐ কাজে কোন ফ্রীল্যান্সার এর ইন্টারভিউ নেওয়া হয়েছে, তবে সেসব কাজের আবেদন না করাই ভাল।
১০. যেসব কাজে বিভিন্ন শর্ত দেওয়া থাকে, আর সেগুলো যদি আপনি সঠিকভাবে পূরণ করতে না পারেন, তাহলে সেসব কাজে আবেদন করবেন না।
১১. যে কাজের জন্য আবেদন করবেন, তার নিচে দেখুন বায়ারের আগের কাজ গুলোর তালিকা দেওয়া আছে। সেখানে যদি দেখেন, বায়ার তার আগের কাজ গুলো বেশি ডলার দিয়ে অন্য ফ্রীল্যান্সারকে দিয়ে করিয়ে ছিল, তাহলে আপনি বেশি ডলার হারেও আবেদন করতে পারেন।
১২. আপনার টাকার চেয়ে মার্কেটপ্লেসে ফীডব্যাকের গুরুত্ব বেশী এটা হাইলাইট করুন । আর অবশ্যই বায়ারের বাজেটের মধ্যে বিড করতে হবে ।
১৩. কাজের জন্য বিড করতে গিয়ে কভার লেটার অবশ্যই আকর্ষনীয় করে লিখবেন, বায়ারকে সম্বোধন করবেন স্যার কিংবা ডিয়ার হায়ারিং ম্যানাজার এভাবে, আপনি কাজটি করতে পারেন এবং করতে আগ্রহী তা বুঝিয়ে বলবেন, এর বেশি কথা বলতে যাবেননা। কভার লেটারের জন্য এই টিউনটি দেখতে পারেন, তবে আমি চেষ্টা করবো কিছু দিনের মধ্যে কভার লেটার লেখার পদ্ধতি নিয়ে একটি আর্টিকেল পাবলিশ করার।
১৪. একটি কভার লেটার বারবার কপি করে সেটা সব জায়গায় পেস্ট করবেননা তাহলে কাজ পাওয়ার যে সম্ভাবনা থাকবে সেটাও হারাবেন, আবার স্প্যামার হিসেবেও চিহ্নিত হতে পারেন ।
১৫. সাধারণত কাজ পাওয়ার মুখ্য সময় গভীর রাত অর্থাত রাত ১টা থেকে ৫টা বা ৬টা, এ সময়ে কাজ বেশি পোস্ট হয়, তাই এ সময় এপ্লাই করলে কাজ পেয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে, অন্য সময় এপ্লাই করতে গেলে দেখবেন আপনি এপ্লাই করার আগেই আরো অনেকজন করে ফেলেছে, এর মধ্যে হায়ার হয়েছে কয়েকজন আর ইন্টারভিউতে কল পেয়েছে আরো কয়েকজন, আর তাই সেখানে আপনার সম্ভাবনা অতি নগন্য।
১৬. পেমেন্ট মেথড ভেরিফাইড এমন বায়ার দেখেই কাজের জন্য এপ্লাই করবেন, এছাড়া অন্য বায়ারদের গ্যারান্টি নেই, আপনাকে দিয়ে কাজ করিয়ে নিয়ে ভাগতে পারে
১৭.ওয়েবডেভলপমেন্ট,গ্রাফিজডিজাইন,ইমেইল মার্কেটিং, আর্টিকেল রাইটিং, ফোরাম পোস্টিং, ওয়েবরিসার্চ, এফিলিয়েট মার্কেটিং, যেকোন একটি কাজ প্রোফেশনাল ভাবে শিখুন, শিখতে কোন দূর্ভলতা যেনো না থাকে তারপর কাজ শুরু করুন।ফিক্সড টাইমের কাজগুলোর পেমেন্টের নিশ্চয়তা কম আর এক্ষেত্রে পেমেন্ট নিতে হবে কাজের শেষে, ঘন্টাভিত্তিক কাজে পেমেন্ট ঘন্টায় ঘন্টায় পাবেন ।সর্বোপরি…
যে কোনো ক্ষেত্রে সফল হবার জন্য পরিশ্রম করতে হয়, অযথা সাফল্য এসে হাতে ধরা দিবেনা, আপনিও যে পথে আগ্রহী, অনলাইনে আয়ের যে বিষয়গুলো আপনার ভালো লাগে সে বিষয়গুলো আপনি নিয়মিত স্টাডি করুন, এ পথে সময় দিন, লেগে থাকুন, আউট পুট অবশ্যই পাবেন। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো।