Showing posts with label খবর. Show all posts
Showing posts with label খবর. Show all posts

ফেসবুক নিয়ে প্রতিমন্ত্রীর চ্যালেঞ্জ

ফেসবুক নিয়ে প্রতিমন্ত্রীর চ্যালেঞ্জ

সাময়িক বন্ধ রাখার পরও যারা ফেসবুক ব্যবহার করছেন তাদের উদ্দেশে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেছেন, ইন্টারনেট সম্পূর্ণ বন্ধ না করে ফেসবুক শতভাগ বন্ধ রাখা যায় না। যারা ব্যবহার করছেন তারাই বলুন কীভাবে সম্ভব?

রোববার (২৯ নভেম্বর) সচিবালয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে এক বৈঠকের শুরুতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইন্টারনেট সম্পূর্ণ বন্ধ না করে ফেসবুক শতভাগ বন্ধ করা সম্ভব কি-না, এটা আপনারাই খোঁজ নেন। আশা করি খোঁজ নিয়ে আপনারাই উত্তরটা দেবেন। পৃথিবীর কোন দেশে, এমনকি যেখানে ফেসবুকের অ্যাডমিনও আছে, হান্ড্রেড পার্সেন্ট (শতভাগ) বন্ধ করা সম্ভব নয়। 

উপস্থিত কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রতিমন্ত্রী বলেন, অপনারা কী অ্যাগ্রি করেন, আপনারা তো দীর্ঘদিন আছেন, আমি তো স্বল্পসময়। হান্ড্রেন্ড পার্সেন্ট কী বন্ধ করা সম্ভব? 

তারানা হালিম বলেন, ফেসবুক হান্ড্রেড পার্সেন্ট বন্ধ করা সম্ভব নয়। ইন্টারনেট যতক্ষণ না সম্পূর্ণ শাটডাউন করেন। সেটা আমরা করতে চাই না। আমরা ইন্টারনেট শাটডাউন করবো না।

সবারই সীমাবদ্ধতা থাকে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রযুক্তি দিয়ে প্রযুক্তির মোকাবেলা করছি। কিন্তু কেউ যদি বলেন, একশ’ ভাগ এটি (ফেসবুক ব্যবহার) সম্ভব, আমি অনুরোধ করবো একশ’ ভাগ কীভাবে সম্ভব আমাকে একটু জানিয়ে যান। তাহলে তিনি একজন অত্যন্ত স্বনামধন্য উদ্ভাবক হিসেবে পুরস্কারও পেতে পারেন। পৃথিবীর কোথাও ইন্টারনেট শাটডাউন ছাড়া ফেসবুক বন্ধ রাখা কোনো প্রযুক্তিবিদ বলতে পারেননি। 

বিকল্প পথে দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যাবে না জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ব্যান্ডউইথ ক্যাপাসিটি কম হলে ব্যবহার করতে পারবেন না। নাশকতাকারীরা ব্যবহার করলেও দ্রুত ফেসবুকের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারছেন না বলে দাবি করেন প্রতিমন্ত্রী। 

কবে নাগাদ ফেসবুক খুলে দেওয়া হবে- প্রশ্নে তারানা হালিম বলেন, এই কথাগুলো আমাকে আহত করে। এখানে আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কিছু নেই। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যখন মনে করবে এখন নিরাপদ, তখন খুলে দেওয়া হবে। যখন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মনে করবে, তখনই খুলে দেওয়া হবে। 

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরীসহ টেলিযোগাযোগ বিভাগের অধীনস্ত বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানরা সভায় উপস্থিত ছিলেন। 

সবুজ সংকেত পেলেই ফেসবুক খোলা হবে বলে জানিয়েছেন - পলক

সবুজ সংকেত পেলেই ফেসবুক খোলা হবে বলে জানিয়েছেন - পলক
সবুজ সংকেত পেলেই ফেসবুক খোলা হবে: পলক
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সবুজ সংকেত পেলেই ফেসবুক, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপসহ সামাজিক যোগাযোগের কয়েকটি মাধ্যম খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
শনিবার দুপুরে সিলেটের এমসি কলেজে ওয়াইফাই জোনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, অপব্যবহার রোধেই সাময়িকভাবে এগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে।
সাইবার অপরাধ দমনে শিগগিরই আইন হচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সাইবার অপরাধ রোধে শিগগির আইন প্রণয়ন করা হবে। এ সংক্রান্ত ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের খসড়া তৈরির কাজ চলছে। শিগগিরই মন্ত্রিসভায় উঠবে এ বিষয়টি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ছয় বছর আগে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা যেখানে ১২ লাখ ছিল, বর্তমানে তা সাড়ে পাঁচ কোটিতে দাঁড়িয়েছে। প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বর্তমানে বিশ্বে ঝুঁকি বাড়ছে।
সাইবার সিকিউরিটি এখন একটি বিরাট ইস্যু উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সাইবার অপরাধরোধ আইনের মাধ্যমে বাংলাদেশে সাইবার অপরাধ, ইন্টারনেট ব্যবহার করে দেশ ও জাতীয় স্বার্থবিরোধী কার্যকলাপকে প্রতিহত করার লক্ষ্যে আমরা সক্ষমতা তৈরি করছি।
এর আগে প্রতিমন্ত্রী বেসরকারি মুঠোফোন কোম্পানি রবির উদ্যোগে এমসি কলেজে ফ্রি ওয়াইফাই জোনের উদ্বোধন করেন। এমসি কলেজের ৫০০ শিক্ষার্থী একসঙ্গে ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ পাবেন।
অনুষ্ঠানে রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড পিপল অফিসার (সিসিপিও) মতিউল ইসলাম নওশাদসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এমসি কলেজের অধ্যক্ষ নিতাই চন্দ্র চন্দের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কলেজের উপাধ্যক্ষ হায়াতুল ইসলাম আকঞ্জি বক্তব্য দেন।

ফেসবুককে আগামীকাল চিঠি পাঠাবে সরকার

ফেসবুককে আগামীকাল চিঠি পাঠাবে সরকার

ফেসবুককে আগামীকাল চিঠি পাঠাবে সরকার
বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকের সাথে একটি চুক্তি করার জন্য আগামীকাল সরকারের পক্ষ থেকে ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে একটি চিঠি পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। এর মাধ্যমে এদেশের ফেসবুক ব্যবহারকারীদের সম্পর্কে তথ্য জানতে পারবে সরকার।  
বাংলাদেশের ইংরেজি সংবাদপত্র ‘ডেইলি স্টার’ সেন্টারে সংবাদকর্মীদের কাছে সরকারের এই পরিকল্পনার বিষয়টি উল্লেখ করে তারানা বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী ফেসবুকের সাথে চুক্তি করার জন্য আমি চিঠিটি লিখবো।
সাইবার আক্রমণে বিশেষত ফেসবুকের মাধ্যমে এই অপতৎপরতায় দেশ অরক্ষিত হয়ে যাওয়ায় সরকারের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়। চলতি মাসের ১৭ তারিখে বর্তমান সরকার ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করার পরিকল্পনা করছে বলে সংবাদকর্মীদের জানিয়েছিলেন তারানা।  
ব্যবহারকারীদের পোস্টের দায়ভার নেটওয়ার্কিং সাইটটি বহন করবে না শর্তে ২০০৬ সালে বাংলাদেশ সরকারের সাথে এমন একটি চুক্তি করার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলো ফেসবুক।
চলতি মাসে
 প্রকাশিত ফেসবুকের গ্লোবাল গভর্নমেন্ট রিকোয়েস্ট রিপোর্ট অনুযায়ী, এ বছরের শুরু থেকে জুন মাস পর্যন্ত ছয় মাসে ব্যবহারকারীদের ব্যাপারে তথ্য জানতে চেয়ে বাংলাদেশ 
সরকারের করা সকল আবেদন ফেসবুক প্রত্যাখান করেছে। 
২০১৩ সাল থেকে অর্ধবার্ষিক রিপোর্ট প্রকাশ শুরুর পর থেকে বাংলাদেশ সরকারের কাছে কোনো তথ্য সরবরাহ করেনি ফেসবুক। এই সময়ে ৩৭ জন ব্যবহারকারি সম্পর্কে তথ্য জানতে চেয়ে ১৬ বার অনুরোধ জানিয়েছিলো সরকার।
বাংলাদেশের ব্যবহারকারীদের জন্য কতগুলো কন্টেন্টে প্রবেশ সীমাবদ্ধতা রয়েছে বা সরকারের আবেদনের প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে সে ব্যাপারে কোনো তথ্য জানায়নি ফেসবুক। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগের এই বিশাল মাধ্যম তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে বৈশ্বিকভাবে ২০ হাজার ৫৬৮ টি পোস্ট এবং স্থানীয় আইন ভঙ্গকারী অন্যান্য কিছু কন্টেন্ট এ বছরের প্রথম অর্ধে সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

জাতীয় পরিচয়পত্র হারালে বা ভুল থাকলে অথবা নতুন করতে গেলে কি করবেন?(তথ্যগুলো সংগ্রহ করে রাখুন)

 জাতীয় পরিচয়পত্র হারালে বা ভুল থাকলে অথবা নতুন করতে গেলে কি করবেন?(তথ্যগুলো সংগ্রহ করে রাখুন)
জাতীয় পরিচয় পত্র হারিয়ে গেলে, ভুল থাকলে অথবা নতুন পরিচয়পত্র করতে গেলে কি করবেন? এছাড়াও অনেককেই জাতীয় পরিচয়পত্রের বিভিন্ন ভুলভ্রান্তি নিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হয়। আবার যারা নতুন পরিচয়পত্র করতে চান তারাও এ বিষয়ে অনেকে অজ্ঞ। কিভাবে করব, কোথায় করব, কি কি লাগবে ইত্যাদি বিষয় জানেন না। আর এ সমস্যা সমাধানের জন্য কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করলে আশা করি সবাই উপকার পাবেন।
পরিচয়পত্রে নিজের নাম, পিতা, মাতা, স্বামী, স্ত্রী ও অভিভাবকের নাম, জন্মতারিখ, রক্তের গ্রুপ এবং ঠিকানা সংশোধন কিংবা বদল করতে হতে পারে। এ জন্য প্রার্থীকে সাদা কাগজে ‘ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন এবং জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানে সহায়তা প্রদান প্রকল্প’- এর পরিচালকেরকাছে আবেদন করতে হবে। এই আবেদন আগারগাঁওয়ের ইসলামিক ফাউন্ডেশন ভবনের সপ্তম তলায় প্রকল্প কার্যালয়ে পাওয়া ছক বা ফরমেও করা যায়।
ফরম পূরণ করে প্রকল্প কার্যালয়ের নির্দিষ্ট কাউন্টারে জমা দেওয়ার পর সেখান থেকে প্রাপ্তি স্বীকারপত্র (প্রাপ্তি নম্বরসংবলিত) দেওয়া হয়। এতে সংশোধিত জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার তারিখ উল্লেখ থাকবে। এই তারিখের সাত দিনের মধ্যে কাউন্টার থেকে সংশোধিত পরিচয়পত্র নিতে হবে।
নাম সংশোধনঃ কেউ পরিচয়পত্রে থাকা নিজের নাম, পিতা, স্বামী কিংবা মাতার নাম সংশোধন করতে চাইলে তাকে আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে-
১। এসএসসি বা সমমান সনদ
২। নাগরিকত্ব সনদ
৩। জন্মনিবন্ধন সনদ
৪। চাকরির প্রমাণপত্র
৫। পাসপোর্ট
৬। নিকাহনামা
৭। পিতা, স্বামী কিংবা মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি।
আবেদনপত্রের সঙ্গে সংযুক্ত এসব নথি অবশ্যই সত্যায়িত হতে হবে। এ ক্ষেত্রে উল্লেখ করা নথির যার যেটি আছে, শুধু সেটি দিলেই চলবে। যেমন, যার শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসির কম, তাকে এসএসসি বা সমমানের সনদের ফটোকপি জমা দিতে হবে না। আবার কেউ যদি চাকরি না করেন, তাকে চাকরির প্রমাণপত্র দিতে হবে না। আবার পাসপোর্ট না থাকলে তা দেয়ার দরকার নেই।
নাম পরিবর্তনঃ
জাতীয় পরিচয়পত্রে নিজের নাম বদল করতে হলে আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে এসএসসি বা সমমানের সনদের সত্যায়িত ফটোকপি (শিক্ষাগত যোগ্যতা এর নিচে হলে দেয়ার দরকার নেই), বিবাহিত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে স্ত্রী বা স্বামীর জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি, ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে সম্পাদিত এফিডেভিট এবং জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত নাম পরিবর্তনসংক্রান্ত বিজ্ঞাপনের কপি। নাম পরিবর্তনের জন্য প্রার্থীকে শুনানির দিন প্রকল্পের কার্যালয়ে কাগজপত্রের মূল কপিসহ হাজির হতে হবে।
স্বামীর নাম সংযোজন বা বাদ দেওয়াঃ
বিয়ের পর কেউ জাতীয় পরিচয়পত্রে স্বামীর নাম যুক্ত করতে চাইলে তাকে কাবিননামা ও স্বামীর জাতীয় পরিচয়পত্র আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে। আর বিবাহবিচ্ছেদের কারণে স্বামীর নাম বাদ দিতে চাইলে আবেদনকারীকে তালাকনামার সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে।
পিতা বা মাতার নাম পরিবর্তনঃ
পিতা বা মাতার নাম পরিবর্তন করতে হলে আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে এসএসসি বা এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষার সনদ অথবা রেজিস্ট্রেশন কার্ড। পিতা বা মাতার পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি। পিতা বা মাতা বা উভয়ে মৃত হলে দিতে হবে ভাই বা বোনের পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি। পিতা-মাতার নাম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা আবেদনকারীর সাক্ষাৎকার নিতে পারেন।
জন্মতারিখ সংশোধনঃ
যাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি বা সমমানের, তাদের আবেদনপত্রের সঙ্গে এসএসসি বা সমমানের সনদের সত্যায়িত ফটোকপি জমা দিতে হবে। বয়সের পার্থক্য অস্বাভাবিক না হলে প্রাপ্তি স্বীকারপত্রে উল্লেখ করা তারিখে সংশোধিত পরিচয়পত্র বিতরণ করা হয়। অস্বাভাবিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সনদের মূল কপি প্রদর্শন কিংবা ব্যক্তিগত শুনানিতে অংশ নিতে হতে পারে। যাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি বা সমমানের কম, তাদের জন্মতারিখ সংশোধনের জন্য আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার আগের তারিখে পাওয়া সার্ভিস বুক বা এমপিওর কপি, ড্রাইভিং লাইসেন্স, জন্ম সদন, নিকাহনামা, পাসপোর্টের কপি প্রভৃতি। এ ক্ষেত্রে প্রকল্প কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা প্রকল্প পরিচালক আবেদনকারীর সাক্ষাৎকার নিয়ে থাকেন। এ ছাড়া দরকার হলে সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তার মাধ্যমে সরেজমিনে তদন্ত করা হয়।
ঠিকানা সংশোধনঃ
জাতীয় পরিচয়পত্রে থাকা বর্তমান ঠিকানা ও ভোটার এলাকা বদল করার সুযোগ আছে। তবে সারা বছর সেই সুযোগ মেলে না। এটা শুধু ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার সময় করা যাবে। বর্তমানে হালনাগাদ করার কাজটি করা হয় শুধু জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে। সারা বছর ভোটার এলাকা বদলের সুযোগ থাকে না কেন, জানতে চাইলে প্রকল্পের কমিউনিকেশন অফিসার দেবাশীষ কুণ্ডু বলেন, ‘আমাদের দেশে ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা, সিটি করপোরেশন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন ভিন্ন ভিন্ন সময়ে হয়। দেখা যায়, একই বছর একাধিক নির্বাচন হয়। একই বছরে কেউ যাতে ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট দিতে না পারেন, তাই সারা বছর ভোটার এলাকা বদলের সুযোগ দেওয়া হয় না।’ হালনাগাদ করার সময় ভোটার এলাকা বদল করতে হলে নতুন ঠিকানার উপজেলা বা থানা নির্বাচন অফিস থেকে দেওয়া ফরম-১৩ অথবা ফরম-১৪ পূরণ করে উপজেলা বা থানা নির্বাচন অফিসে আবেদন করতে হবে। তবে ঠিকানা পরিবর্তন না করে সংশোধন (বানান, বাড়ির নম্বর, সড়ক নম্বর ভুল থাকলে) করার সুযোগ ঢাকার প্রকল্প কার্যালয়ে রয়েছে।এ ছাড়া স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন বা এর কোনো তথ্য সংশোধনেরও সুযোগ আছে। ঠিকানার ছোটখাটো ভুল সংশোধন বা স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তনের সুযোগ সারা বছরই থাকে। এ জন্য আবেদনপত্রের সঙ্গে প্রকল্প কার্যালয়ের নির্দিষ্ট কাউন্টারে জমা দিতে হবে পরিবারের কোনো সদস্যের পরিচয়পত্রের কপি, গ্যাস, বিদ্যুৎ, টেলিফোন বিলের যেকোনো একটির কপি বা কর দেওয়ার কপি। আরও জমা দিতে হবে চেয়ারম্যান বা ওয়ার্ড কাউন্সিলরের প্রত্যয়নপত্র। স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ওই ঠিকানায় নিজের নামে বা পিতা বা মাতার নামে থাকা জমি বা ফ্ল্যাটের দলিলের সত্যায়িত ফটোকপিও জমা দিতে হবে।
রক্তের গ্রুপ সংশোধনঃ
রক্তের গ্রুপ সংশোধন করতে হলে মেডিকেল প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।
বিবিধ সংশোধনঃ
জাতীয় পরিচয়পত্রে কোনো নামের আগে পদবি, উপাধি, খেতাব ইত্যাদি সংযুক্ত করা যাবে না। পিতা বা স্বামী বা মাতাকে মৃত উল্লেখ করতে চাইলে মৃত্যুর সনদ দাখিল করতে হবে। জীবিত পিতা বা স্বামী বা মাতাকে ভুলক্রমে মৃত হিসেবে উল্লেখ করার কারণে পরিচয়পত্র সংশোধন করতে হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পরিচয়পত্রের কপি দাখিল করতে হবে।
হালনাগাদ কর্মসূচির পরিচয়পত্র সংশোধনঃ
২০০৯ সালে হালনাগাদ কর্মসূচির সময় যাদের নাম ভোটার তালিকায় যুক্ত হয়েছে, তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রে কোনো ভুল থাকলে বা হারিয়ে গেলে তাদের ২০১০ সালের ডিসেম্বরের পর প্রকল্প কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে হবে।
পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলেঃ
পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট থানায় ভোটার নম্বর বা আইডি নম্বর উল্লেখ করে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে হবে। এরপর জিডির মূল কপিসহ প্রকল্প কার্যালয় থেকে নেওয়া ছকের আবেদনপত্র নির্দিষ্ট কাউন্টারে জমা দিয়ে প্রাপ্তি স্বীকারপত্র নিতে হবে। প্রাপ্তি স্বীকারপত্রে উল্লেখ করা তারিখে ডুপ্লিকেট পরিচয়পত্র বিতরণ করা হয়।
যারা এখনো পরিচয়পত্র ওঠাননিঃ
ঢাকা সিটি করপোরেশনের যেসব বাসিন্দা (ডেমরা, যাত্রাবাড়ী, কদমতলী, শ্যামপুর থানা ছাড়া) ২০০৭-০৮ সালে পরিচয়পত্রের জন্য সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেছেন, কিন্তু সেটি সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে গিয়ে আর আনেননি, তারা প্রকল্প কার্যালয়ে গিয়ে মূল প্রাপ্তি রসিদ জমা দিয়ে সেই পরিচয়পত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। ডিসিসির বাইরে ঢাকা জেলার অন্যান্য উপজেলা বা থানার বাসিন্দা কিংবা দেশের অন্য কোনো জেলার বাসিন্দারা পরিচয়পত্র নির্দিষ্ট সময়ে না উঠিয়ে থাকলে, তাঁদের প্রাপ্তি রসিদ সংশ্লিষ্ট উপজেলা, থানা বা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার মন্তব্যসহ প্রাপ্তি রসিদ জমা দিয়ে পরিচয়পত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। তাঁদের মূল প্রাপ্তি রসিদ প্রকল্প কার্যালয়ের নির্দিষ্ট কাউন্টারে জমা দিয়ে প্রাপ্তি স্বীকারপত্র গ্রহণ করতে হবে। প্রাপ্তি স্বীকারপত্রে উল্লেখ করা তারিখে তাঁদের পরিচয়পত্র দেওয়া হবে।
অভিবাসীরা যেভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র পাবেনঃ
অভিবাসী বাংলাদেশিদের জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার সুযোগ আছে। এ জন্য তাঁদের অবশ্যই দেশে আসতে হবে। তাঁদের থাকতে হবে পাসপোর্ট। আর তাতে বাংলাদেশে আসার সিল (অ্যারাইভাল সিল) থাকতে হবে। কারও যদি পাসপোর্ট না থাকে, তবে তাঁকে এমন কোনো কাগজ দেখাতে হবে, যেটা প্রমাণ করে যে তিনি বিদেশে ছিলেন। পাসপোর্ট বা সেই প্রমাণপত্র নিয়ে তাঁকে যেতে হবে তাঁর থানা বা উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে। সেখানে জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া এবং ভোটার হওয়ার আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে। সেখানে নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আবেদনকারীকে ফরম ও আনুষঙ্গিক কাগজপত্র নিয়ে আসতে হবে জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে। সেই দপ্তর থেকে সব কাগজপত্র ডাকযোগে পাঠিয়ে দেওয়া হবে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অধীনে থাকা ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন এবং জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানে সহায়তা প্রদান প্রকল্পের দপ্তরে। তবে জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে কাগজপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষ করে আবেদনকারী সেগুলো হাতে হাতে নিয়ে আসতে পারেন প্রকল্পের কার্যালয়ে। এখানে আবেদনকারীর ছবি তোলা হবে, নেওয়া হবে হাতের ছাপ ও চোখের (আইরিশ) স্ক্যান। এসব কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর আবেদনকারীকে প্রাপ্তি রসিদ দেওয়া হবে। তাতে আবেদনকারীকে ১৫ দিন পর আগারগাঁওয়ের ইসলামিক ফাউন্ডেশন ভবনের সপ্তম তলায় প্রকল্পের দপ্তর থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হবে। তখন অবশ্যই প্রাপ্তি রসিদ আবেদনকারীর সঙ্গে থাকতে হবে।
নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র পেতে হলেঃ
বাংলাদেশে কারও বয়স ১৮ বছর হলেই কেবল তিনি ভোটার তালিকায় নাম ওঠাতে পারবেন। দেশের প্রতিটি উপজেলায় সার্ভার স্টেশন তৈরির প্রক্রিয়া চলছে। এসব স্টেশনে ভোটার তালিকা তৈরি ও বিতরণের কাজ করা হবে। এগুলোয় কার্যক্রম শুরু হলে যখন যার বয়স ১৮ বছর হবে, তখন তিনি ভোটার তালিকায় নাম ওঠাতে পারবেন। এখন ১৮ বছর পূর্ণ হওয়া মাত্রই জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির সুযোগ থাকছে তাদেরই, যাদের চিকিৎসা, পড়াশোনা বা কাজের জন্য বিদেশে যেতে হবে। এ জাতীয় কোনো প্রয়োজনীয়তার প্রমাণ দেখাতে হবে।
যোগাযোগঃ
ভোটার তালিকাসংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য জানতে হলে যোগাযোগ করতে হবে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন এবং জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানে সহায়তা প্রদান প্রকল্পের আগারগাঁওয়ের ইসলামিক ফাউন্ডেশন ভবনের সপ্তম তলার কার্যালয়ে।

ফেসবুক বন্ধের কারণ জানিয়ে তারানা হালিমের 'খোলা চিঠি'

ফেসবুক বন্ধের কারণ জানিয়ে তারানা হালিমের 'খোলা চিঠি'
দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ফেসবুকসহ কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধের প্রতিক্রিয়া লিখেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম এমপি। গণমাধ্যমের উদ্দেশ্য তার স্বাক্ষরিত ওই লেখায় তিনি শুধুমাত্র মন্ত্রী হিসেবে না, একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে ওই ব্যবস্থা গ্রহণের প্রেক্ষাপট ও যৌক্তিকতা তুলে ধরেছেন।
তিন পৃষ্ঠার ওই চিঠিতে প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম লিখেছেন, ‘প্রতিমন্ত্রীর জায়গা থেকে লিখছি না”, লিখছি এ দেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে- যে দেশকে ও দেশের মানুষকে ভালোবাসে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করেই কিন্তু- চাঁদে কারো মুখ দেখার গুজবে প্রাণ হারিয়েছে বহু মানুষ, আবার একটি পোস্টের কারণে (সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে) বৌদ্ধ বিহারে চলেছে হামলা- আমরা সব ভুলে গেছি।'
ফান্সে সন্ত্রাসী হামলার পরে ইন্টারনেট বন্ধের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, 'বহু দেশ আজকের দিন পর্যন্ত সে দেশগুলোর মানুষের নিরাপত্তার জন্য “ইন্টারনেট” পর্যন্তও সাময়িক বন্ধ রেখেছে। সেদেশের নাগরিকেরা দেশের বৃহত্তর স্বার্থে তা মেনে নিয়েছে, “টু” শব্দটি করেনি। হয়তো তারা ভাবছেন- “সামাজিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো দূর্ঘটনা ঘটার আগে “সাময়িক বন্ধ” রাখলে এই মানুষগুলোর জীবন (FRANCE এর) বাঁচানো যেত কি?'
প্রতিমন্ত্রী গণমাধ্যমের আরেকটি আলোচিত ঘটনা উল্লেখ করে নৈতিক অবস্থানের উদাহরণ দিয়ে লিখেছেন, 'আরেকটি ঘটনা বলি, পুলিৎজার পুরস্কার পাওয়া এক চিত্রগ্রাহক একটি ছবি তুললেন ক্ষুধার্ত এক শিশু এবং তার মুখোমুখি একটি শকুনের। ছবি হিসাবে অসাধারণ। তার সামনে ২টি বিকল্প ছিল- হয় তিনি ছবিটি তুলবেন, নয়তো শিশুটিকে দ্রুত তুলে নিয়ে নিকটবর্তী হাসপাতালে যাবেন। তার কাছে প্রথম বিকল্পটি আকর্ষণীয় মনে হলো। তিনি তুললেন অসাধারণ ছবিটি। কিন্তু কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে শিশুটি মারা গেল। চিত্রগ্রাহক পেলেন “পুলিৎজার পুরস্কার”। কর্মের এক বিরল স্বীকৃতি। কিন্তু বিবেক তাকে তাড়া করলো সর্বক্ষণ- “যদি তখন ছবি না তুলে শিশুটিকে তিনি নিয়ে যেতেন নিকটবর্তী অস্থায়ী চিকিৎসাকেন্দ্রে, অন্তত বাঁচাবার চেষ্টা তো করতে পারতেন”! অনুশোচনায় আত্মহত্যা করলেন তিনি। আমরা বড় বেশি কঠিন, কঠোর হয়ে গেছি- তাই মানুষের জীবন বাঁচানোর চেষ্টাকারীকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়। ধন্যবাদ সকলকে যারা মানুষের জীবন বাঁচানোর প্রচেষ্টাকে ব্যঙ্গ করেন, তিরস্কার করেন। এ জন্যই হয়ত মানুষের জায়গায় আসছে রোবট। রোবট হবার পথ থেকে খুব দূরে কি আমরা?'
প্রতিমন্ত্রী তারানা গণমাধ্যমকে তার বক্তব্যের বিভিন্ন প্রেক্ষাপট বুঝে লেখার পরামর্শ দিয়ে কয়েকটি বিষয় তুলে ধরেন। তার বক্তব্য যেনো খন্ডাংশ আকারে গণমাধ্যমে প্রকাশ না পায় তাও অনুরোধ করেন তিনি।  ফেসবুকসহ কিছু সামাজিক যোগাযোগ সাইট বন্ধ করা হয়েছে তার যৌক্তিকতা চারটি পয়েন্টে তিনি যা লিখেছেন, তা নিম্নরুপ-
প্রথমতঃ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অস্থায়ীভাবে, সাময়িক সময়ের জন্য জননিরাপত্তার স্বার্থে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে, সরকারের জনজীবনের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বের অংশ হিসাবে (আবারো উল্লেখ করছি) সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে।
দ্বিতীয়তঃ লক্ষ্য করবেন এবার শীর্ষ দুই যুদ্ধাপরাধীর বিচারের রায়ের আগে বা পরে দেশে বড় ধরণের কোন নাশকতা ঘটেনি। ধর্মযাজকের উপর হামলাকারী গ্রেফতার হয়েছে। বিশিষ্টজনদের প্রাণনাশের হুমকিদাতাও গ্রেফতার হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করলে জানতে পারবেন নাশকতার জন্য কতজন পরিকল্পনাকারীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সাময়িক বন্ধ রাখার জন্য এবার গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে।
তৃতীয়তঃ না, “মাথা ব্যথার জন্য আমরা মাথা কেটে ফেলিনি”- কারণ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সবুজ সঙ্কেত ও সরকারের নির্দেশনা পেলে এসব মাধ্যম খুলে দেয়া হবে। সরকারের দায়িত্ব জনগণের নিরাপত্তা বিধান করা। যদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম খুলে দেবার জন্য একটি প্রাণহাণিও ঘটে তখন কিন্তু জনগণ সরকারকেই দোষারোপ করেন, করবেন। তাহলে জননিরাপত্তার স্বার্থে সরকার সাময়িক সহযোগিতা চাইলে তা দিতে আমরা কুণ্ঠিত হব কেন?
চতুর্থতঃ বিকল্প ব্যবস্থা কি নেয়া যেত না? আমি দায়িত্ব গ্রহণ করেছি প্রতিমন্ত্রী হিসেবে প্রায় সাড়ে চার মাস। এর মধ্যে সিম/রিম নিবন্ধন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের কার্যক্রম জোরদার করা, ব্যান্ডউইথের দাম কমানো, টেলিটককে সক্ষম করা, বায়োমেট্রিক্স চালু করা, ডাক বিভাগের জন্য E-Cash transfer সম্প্রসারণ ও ১১৮টি যানবাহন ক্রয় প্রক্রিয়া, এমএনপি চালুর জন্য প্রক্রিয়া শুরুসহ দায়িত্ব পাবার ৩ দিনের মাথায় “প্রযুক্তি দিয়ে প্রযুক্তিকে মোকাবিলা” করার জন্যও কাজ শুরু করেছি।
প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরে তিনি খুব অল্পসময় পেয়েছেন উল্লেখ করে তারানা হালিম লিখেছেন,  প্রযুক্তি দিয়ে প্রযুক্তিকে মোকাবিলার জন্য আমি প্রতিমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নেবার পর ইন্টারনেট সেফটি সলিউশন আমদানি করার প্রক্রিয়া শুরু করেছি, যার মাধ্যমে দেশের বাইরের আপত্তিকর কনটেন্ট ফিল্টার্ড হয়ে দেশে প্রবেশ করবে, জনগণের ও নারীদের নিরাপত্তা বাড়বে।  আইএসপি ও ইন্টারনেট ব্যবহার সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য যাচাই বাছাই চলছে বলেও জানান তিনি।
তার নেওয়া পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন হলে সুফল আসবে উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, 'এই কাজগুলো কিন্তু চলছে। ৩ মাসের খুব বেশি সময় নয়, অচিরেই এর ফল পাবেন।'
বর্তমান প্রেক্ষাপটে যারা প্রক্সি বা ভিপিএন দিয়ে বিকল্পপথে ফেসবুক ব্যবহার করছেন, 'তাদের নিরাপত্তা বিষয়ে সাবধান করে তারানা লিখেছেন, যারা ভিন্ন পথে এসব মাধ্যম ব্যবহার করে তাদের নিজেদের ID হ্যাক হতে পারে- এই সতর্কতাও দেয়া প্রয়োজন।'
সেইসাথে যারা ফেসবুক ব্যবহার করছেন না তাদের ধন্যবাদ দিয়ে তারানা লিখেছেন, 'যারা জনস্বার্থে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার বন্ধ রেখে সাময়িক অসুবিধা মেনে নিয়ে নাশকতাকারীদের খুঁজে বের করতে, নাগরিকের জীবন বাঁচাতে সরকারকে সহযোগিতা করছেন তাদের এই দেশপ্রেমের জন্য অকুণ্ঠ সাধুবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। '
অনেকেই ফেসবুক বন্ধ হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন এবং প্রতিমন্ত্রীকে গালি দিচ্ছেন, সে বিষয়ে তিনি মোটেও চিন্তিত না বরং তিনি তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছেন উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, 'যারা আমাকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ ও তিরস্কার করছেন তাদের কাছে আমি জীবন বাঁচাবার চেষ্টা করার জন্য, রাষ্ট্রের একজন জনপ্রতিনিধি হিসাবে জননিরাপত্তা বিধানে ভূমিকা পালনে গর্বিত হয়েও ক্ষমাপ্রার্থী। সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক আমাদের সকলের দায়িত্ব জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এই কাজটি সততা ও নিষ্ঠার সাথে করার জন্য যারা আমাকে প্রবল তিরস্কার করেছেন তা আমি নতমস্তকে গ্রহণ করলাম, কারণ হয়তো এ কারণে আজ কোথাও এক মায়ের সন্তান হাসিমুখে তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে- অক্ষত। এ প্রাপ্তিটুকুও আমার জন্য কম নয়। কম নয় কারো জন্যই।'
বিএনপি নেতা সালাউদ্ধিন কাদের চৌধুরী ও জামায়ান নেতা আলী আহসান মুজাহিদের ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ার আগে থেকেই সর্তকতা হিসেবে ১৮ নভেম্বর দুপুর থেকে ফেসবুকসহ কিছু সামাজিক গণমাধ্যম বন্ধের নির্দেশ দেয় সরকার।


ফেসবুক খুলে দেওয়ার দাবি গড়াল রাস্তায়

ফেসবুক খুলে দেওয়ার দাবি গড়াল রাস্তায়
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এবং ভাইভার, ম্যাসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপ খুলে দেওয়ার দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন এক শিক্ষার্থী। আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের সামনে ব্যানার হাতে প্রতিবাদ করতে দেখা গেছে তাঁকে। এর আগে দুপুর ১২টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবে সামনে একই ব্যানার নিয়ে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।
প্রতিবাদী ওই শিক্ষার্থীর নাম মো. মোখলেছুর রহমান। তিনি রাজধানীর তেজগাঁও কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক (সম্মান) তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তাঁর গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায়।
মোখলেছুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘২০১৩ সালের ৬ ডিসেম্বর থেকে নিজের বিবেকের তাড়নায় দেশের মানুষের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে এককভাবে সামাজিক সচেতনতামূলক কাজ করে আসছি। মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ড পাওয়া সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর হয়ে গেছে। কিন্তু এখনো সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, ভাইভার, ম্যাসেঞ্জার ও হোয়াট্সঅ্যাপ খুলে দিচ্ছে না। এগুলো নিয়ে আর কত টালবাহানা করবে? আমি চাই শিগগিরই জনসাধারণের জন্য এগুলো উন্মুক্ত করে দেওয়া হোক।’
এদিকে ফেসবুক ও যোগাযোগের বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন ভাইভার, ম্যাসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ থাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। শিক্ষার্থীরা বলছে, অল্পসংখ্যক শিক্ষার্থী বিকল্প পদ্ধতিতে এগুলো ব্যবহার করলেও অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা তা ব্যবহার করতে পারছে না।
এ নিয়ে কথা হয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রাহাতের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এভাবে একচেটিয়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো বন্ধ করে রাখা মোটেও যুক্তিসঙ্গত নয়। বিকল্প পদ্ধতি ব্যবহার করে অনেকেই ফেসবুক ব্যবহার করছে। কিন্তু অধিকাংশ শিক্ষার্থীই তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।’
সমাজকল্যাণ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো অনেকেই ভালো কাজে ব্যবহার করে আবার অনেকেই খারাপ কাজে ব্যবহার করে। তবে এভাবে একচেটিয়া বন্ধ রাখা কোনোভাবে ঠিক নয়।’
এর আগে গত সোমবার ঝিনাইদহ-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকী জাতীয় সংসদ ভবনে দশম জাতীয় সংসদের অষ্টম অধিবেশনে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়ার আহ্বান জানান। অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য বলেছিলেন, ‘সব প্রযুক্তির ভালো-মন্দ দুটি দিকই আছে। প্রযুক্তির কুফল চিন্তা করে যদি আমরা প্রযুক্তির ব্যবহারই বন্ধ করে দিতাম, তাহলে হয়তো মানবসভ্যতার এই অকল্পনীয় উৎকর্ষতা লাভ হতো না। প্রযুক্তির অপব্যবহারে আরো উন্নত প্রযুক্তির উদ্ভাবন এবং ব্যবহার ঘটেছে। কিন্তু সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করে যদি ভেবে নেয়, ফেসবুক, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ একদম বন্ধ হয়ে গেছে, তা মোটেই সঠিক নয়। অনেকেই নতুন নতুন অ্যাপস ব্যবহার করে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন এবং নাশকতাবাদীরাও চাইলে সেটি করতে পারবেন না-তা আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়।’

তাহজীব আলম বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের মাধ্যমে সরকারের যে মূল উদ্দেশ্য-সামাজিক মাধ্যমের অপব্যবহার রোধ-তা থেকে সরকার অনেক দূরে। কাজের কিছু না হলেও এই সিদ্ধান্ত জনমনে অযাচিত আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। অন্যদিকে সরকারের অঙ্গীকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অগ্রযাত্রাকে কিছুটা হলেও ব্যাহত করছে। পুরো ব্যাপারটি আরো গভীরভাবে চিন্তা করার দাবি জানান তিনি।
একই দিন সচিবালয়ে ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো বন্ধ থাকায় তা সন্ত্রাস ও নাশকতা দমনে কার্যকর ভূমিকা রেখেছে বলে জানিয়েছিলেন ডাক, তার ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। আর দেশের একজন নাগরিকেরও নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের এ সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে বলেও জানান তিনি।
গত ১৮ নভেম্বর থেকে ফেসবুকসহ ইন্টারনেটে সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপ, ভাইবারসহ বন্ধ রাখা সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম খুলে দিতে গত বুধবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কুমার দেবুল দে সরাসরি ও ফ্যাক্সযোগে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর একটি আইনি নোটিশ পাঠান।