ফেসবুক বন্ধের ঘটনায় ক্রমশ বাড়ছে ক্ষোভ।

নিরাপত্তার অজুহাতে বন্ধ থাকা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক খুলে দেয়ার দাবিতে এবার সোচ্চার হয়েছেন লেখক-শিল্পী-সাংস্কৃতি কর্মী-অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট-অনলাইন ব্যবসায়ীরা। শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগস্থ কেন্দ্রীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত অবস্থান ধর্মঘট থেকে তারা ফেসবুক খুলে দেবার দাবীতে বক্তব্য রাখেন ।

লেখক-শিল্পী-সাংস্কৃতি কর্মী-অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট-অনলাইন ব্যবসায়ীর ব্যানারে ঐ অবস্থান ধর্মঘট থেকে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ‘নিরাপত্তার অজুহাত দিয়ে তারানা হালিম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কৌশলে জন বিচ্ছিন্ন এবং তরুণদের থেকে দূরে ঠেলে দিচ্ছেন’ ।
 
বক্তারা বলেন, ‘আজ তরুণ সমাজ ফেসবুককে তাদের অন্যতম গণমাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছে। তারা সেখানে বিভিন্ন বিষয়ে লেখে নিজেদের লেখালেখির হাতকে সমৃদ্ধ করছে। কিন্তু এটি বন্ধ করে দেয়ায় গত দুই সপ্তাহ পর্যন্ত তারা তা করতে পারছেন না। এমনকি তারা বিভিন্ন ধরণের পড়ালেখাও চালিয়ে থাকেন ফেসবুকের মাধ্যমে। তাছাড়া সমাজের নানা অসঙ্গতি তুলে ধরে তারা এর মাধ্যমে সামাজিক কাজ করে থাকেন। কিন্তু এটি বন্ধ করে দেয়ায় তরুণ সমাজ হতাশ হয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে তাদের মধ্যে গুটি কয়েক বিকল্প পথে ফেসবুক ব্যবহার করছেন। কেউ কেউ আবার ফেসবুক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পর্নোগ্রাফির দিকে ঝুঁকছে।’
তারা বলেন, ‘শুধু তরুণ সমাজই নয় এটি বন্ধ করে দেয়ায় সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের যে প্রচারণার সুযোগ ছিল সেটি পর্যন্ত বন্ধ হয়ে গেছে। এমনকি গত ১৫ দিন যাবৎ অনলাইন ব্যবসায়ীদের ব্যবসায় ধ্বস নেমেছে। এ অবস্থায় আমরা সরকারকে আহ্বান করবো তারা যেন শিগগিরই এটি খুলে দেন। তাহলে তরুণদের মন জয় করা যাবে। নতুবা তরুণ সমাজের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার তৈরি হবে।’
বক্তারা আরো বলেন, ‘ফেসবুক বন্ধ করে দেয়ায় যে যুদ্ধাপরধীরাই বেশি লাভবান হচ্ছে। ক্ষতি হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের। তাই কাল বিলম্ব না করে অবিলম্বে আমরা ফেসবুক খুলে দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
এসময় বক্তব্য রাখেন, রবীন আহসান, ইফতেখার উদ্দিন বাবুল প্রমুখ।
এদিকে, গতকাল বৃহস্পতিবার ফেসবুকসহ বন্ধ থাকা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম খুলে দেওয়ার দাবিতে  রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেছে  জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা জনগণের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাবিরোধী সব আইন বাতিল  করার দাবি জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দ’র ব্যানারে মানববন্ধন করে এই দাবি জানানো হয়।
open-facebook
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া বক্তারা দাবি করেন, ফেসবুকের কল্যাণেই গণজাগরণ মঞ্চের মতো জাগরণ সৃষ্টি হয়েছিল। অথচ নিরাপত্তার অজুহাতে গত নভেম্বর মাসে বাংলাদেশে ফেসবুক, ভাইবার ও হোয়াটঅ্যাপস  বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সন্ত্রাস থেমে থাকেনি, মসজিদে ঢুকে প্রকাশ্যে গুলি করে খুন করার মতো ঘটনা ঘটেছে। যখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো বাংলাদেশে জনপ্রিয় হয়নি তখনো সারা দেশে একযোগে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। তাই নিরাপত্তার খোঁড়া অজুহাতে যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধের সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের সিদ্ধান্ত শুধু জনসাধারণের কথা বলার জায়গা সঙ্কুচিত করা ছাড়া কোনো বড় ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডরোধে কার্যকর হবে, অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে সেটি বলা যাচ্ছে না।
FB-1
ডিজিটাল দিনাজপুর কমিউনিটি ও দিনাজপুর ফ্রিল্যান্সার অ্যাসোসিয়েশন ‘দেশের স্বার্থে ফ্রিল্যান্সার বাঁচাতে সোশ্যাল মিডিয়া চালুর দাবি’তে মানববন্ধ করেছে। গত সোমবার দুপুরে দিনাজপুর প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন করে তারা।
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার নিমতলা মোড়ে ডিজিটাল দিনাজপুর কমিউনিটি ফুলবাড়ী শাখার উদ্যোগে ফেসবুক, ভাইবার সোস্যাল সার্ভিসগুলো চালুর দাবিতে মানববন্ধন ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান।
মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় ফুলবাড়ী নিমতলা মোড়ে ডিজিটাল দিনাজপুর কমিউনিটি ফুলবাড়ী শাখার মোঃ ইউসুফ আল মিল্টন এর নেতৃত্বে ২ শতাধিক ছাত্র ফেসবুক ভাইবার ও সোস্যাল সার্ভিসগুলো অবিলম্বে চালুর দাবিতে মানব বন্ধন করেন।
মানববন্ধন শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধান মন্ত্রী বরবার স্মারকলিপি প্রদান করেন।
open-facebook-demand-on-bdsk

শেয়ার করুন
পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট