ফেসবুক বন্ধ নিয়ে তারকাদের অভিমত।

 

বর্তমান সময়ে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ফেসবুক। সামাজিক যোগাযোগের এ মাধ্যমে দ্রুত বহুসংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়া যায়। যার কারণে এ প্রজন্মের কাছে খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এ মাধ্যমটি। অনেকের কাছে এ মাধ্যমটি আসক্তিতে পরিণত হয়েছে।
কিছু সংখ্যক ফেসবুক ব্যবহারকারী এর মাধ্যমে অপকর্ম চালাচ্ছে। এমন ইস্যুতে সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার সাময়িকভাবে ফেসবুকসহ ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ করে দিয়েছে। এ নিয়ে বিপাকে পড়েছে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা।
ঢাকাই চলচ্চিত্রের তারকারাও ফেসবুকের মাধ্যমে তাদের কাজ নিয়ে ভক্তদের কাছে দ্রুত পৌঁছে যেতে পারেন। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম বন্ধ করা প্রসঙ্গে কথা হয় ঢালিউডের দশ তারকার সঙ্গে। তাদের অভিমত নিয়েই সাজানো হয়েছে এ প্রতিবেদন।
‘ফেসবুক ছাড়া মানুষ বেঁচে থাকবে’
কেয়া : আমার যখন কোনো কিছু ভালো লাগে না তখনই ফেসবুকে ঢুকে বন্ধুদের স্ট্যাটাস, কমেন্টস দেখি ও চ্যাট করি। এখন ফেসবুক নেই তাই সব কিছু একটু দূরে দূরে মনে হচ্ছে। দেখা গেছে, অনেক পরিচিত মানুষের সঙ্গে ফোনে কথা বলা হয় না কিন্তু ফেসবুকের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সরকার দেশের মানুষের ভালোর জন্যই ফেসবুক বন্ধ করে দিয়েছেন। সরকার বলছেন, মানুষের সিকিউরিটির জন্যই ফেসবুক বন্ধ করা হয়েছে। ফেসবুকের মাধ্যমে ভালোর চেয়ে যদি যদি মন্দ কাজ বেশি হয়, তা হলে না থাকাই ভালো। ফেসবুক ছাড়া মানুষ বেঁচে থাকবে।
‘সাময়িক অসুবিধা হচ্ছে’
সম্রাট : জাতীয় নিরাপত্তার কারণে ফেসবুক সরকারিভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। যেহেতু এটা হাই কমান্ডের অর্ডার অবশ্যই দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সুবিধার্থে এটা করা হয়েছ। এটাতো আমাদের মানতেই হবে। এ ছাড়া আমাদের অন্য কোনো উপায় নেই। তবে হ্যাঁ, আমাদের সাময়িক অসুবিধা হচ্ছে। কারণ আমরা যারা মিডিয়াতে আছি আমাদের যোগাযোগের ব্যাপার রয়েছে। আমাদের কাজের ব্যাপারে অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হয়। সে ক্ষেত্রে আমাদের একটু অসুবিধা হচ্ছে। আশা করি, সরকার খুব তাড়াতাড়ি ফেসবুক খুলে দিবেন।
‘ফেসবুক যোগাযোগের একটি ভালো মাধ্যম’
রেসি : আমাদের কাজের ব্যস্ততার কারণে অনেকের সঙ্গেই যোগাযোগ করা সম্ভব হয় না। ফেসবুকের মাধ্যমে খুব সহজেই অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব। কয়েকদিন হলো- সিনেমার শুটিং করছি। কিন্তু এটা অনেকেই জানেন না। এটা জনতে হলে পত্রিকা পড়তে হবে। আর ফেসবুক চালু থাকলে খুব সহজেই আমার ফ্রেন্ডস ও ফলোয়ার এ সব তথ্য জানতে পারতেন। এটা হলো- ফেসবুকের সুবিধা। আর অসুবিধা হলো কিছু খারাপ লোক এটাকে খারাপভাবে ব্যবহার করছেন। সব মিলিয়ে বলব, ফেসবুক যোগাযোগের একটি ভালো মাধ্যম।
‘ফেসবুক বন্ধ করে দেয়াটা খুবই দুঃখজনক’
নিরব : ফেসবুক বন্ধ করে দেয়াটা খুবই দুঃখজনক। সরকার যখন দেখেছেন- ফেসবুকের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে ক্রাইম করা হচ্ছে, তখনই এটা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমি বলব, ভালো জিনিসকে অপব্যবহার করা ঠিক নয়।
‘আমি রীতিমতো বিরক্ত’
আঁচল আঁখি : প্রথমেই বলব, আমাদের ভালো হবে বলেই সরকার ফেসবুক বন্ধ করে দিয়েছেন। আর অনেক দিন হয় আমি ফেসবুকে ঢুকি না। মায়ের আইডিতে মাঝে মাঝে বসি। নিজের আইডিটা অনেক দিন ধরে ব্যবহার করি না। কারণ হলো খারাপ কিছু মানুষ ফেক আইডি খুলে ফেসবুকে বিরক্ত করে। এ জন্য আমি রীতিমতো বিরক্ত। সব শেষে বলব, ফেসবুক বন্ধ না করে খারাপ মানুষ‍গুলোকে ধরে শাস্তি দেয়া উচিত।
‘দুপাল্লাই গুরুত্বপূর্ণ’
আরেফিন শুভ : আমার মনে হয় দুপাল্লাই গুরুত্বপূর্ণ। আমার কাছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম শুধু ছবি আপলোড করার জন্য নয়। এটা গুরুত্বপূর্ণ একটি মাধ্যম। ঠিক তেমনিভাবে আমার দেশের সিকিউরিটিও গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন কারণে সরকারিভাবে ফেসবুক সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। এটা আমাদের সার্পোট করা উচিৎ। সরকার কিন্তু বলেননি এটা চিরজীবনের জন্য বন্ধ থাকবে। সবার কাছে আমার প্রশ্ন সামাজিক যোগাযোগেরমাধ্যমের গুরুত্বটা বেশি না, আমার দেশের একটা সংকট মুহুর্তে তার সিকিউরিটি বেশি গুরত্বপূর্ণ। সামাজিক যোগাযোগেরমাধ্যম পৃথিবী সৃষ্টি লগ্নে ছিল না কিন্তু দেশটা অনেক আগে থেকে ছিল। আমার কাছে দেশটা আগে। ব্যক্তিগত কিছুটা সমস্যা হলেও রাষ্ট্রের স্বার্থে এটাকে মেনে নিতে হবে।
‘বৃহৎ স্বার্থে ছোট স্বার্থ ত্যাগ করতে হয়’
সাইমন সাদিক : ফোন কল যেভাবে শনাক্ত করা যায় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো সেভাবে শনাক্ত করা কঠিন। তাই দেশের রাজনৈতিক অবস্থার কথা চিন্তা করে সরকার সাময়িকভাবে ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো বন্ধ করেছেন। দেশের বৃহৎ স্বার্থে ছোট ছোট কিছু স্বার্থ ত্যাগ করতে হয়।
‘বোরিং টাইমে ফেসবুকে কাটাই’
জাকিয়া বারী মম : ফেসবুকে আমি টাইম পাস করি, এ জন্য আমার কোনো অসুবিধা নেই। যারা এটাকে ব্যবহার করে খারাপ কাজ করেন, তাদের জন্য সমস্যা। যেহেতু এটা দেশের ইস্যু সরকার যা ভালো মনে করবেন সেটাই ভালো। ফেসবুকে আমি জাস্ট টাইম পাস করি। খুব বোরিং টাইম হলে আমি ফেসবুকে কাটাই।
‘কিছুটা খারাপ লাগে’
বাপ্পি চৌধুরী : ফেসবুক না থাকায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র নিয়ে প্রকাশিত খবর শেয়ার দিতে পারছি না। এ ছাড়া আমাদের ফ্যান ফলোয়ারদের দেখতে পারছি না। এ জন্য কিছুটা খারাপ লাগে। আগের মতো আপডেট দিতে পারছি না। এ ছাড়া তেমন কোনো ক্ষতি হচ্ছে না।
‘যা হচ্ছে ভালোই হচ্ছে’
বিদ্যা সিনহা মিম : আমার কোনো কিছু নিয়ে খুব বেশি আগ্রহ থাকে না। ফেসবুক নেই এটা নিয়ে আমি তেমন কোনো সমস্যা ফিল করছি না। ফেসবুক থাকলেও আমার কোনো সমস্যা নেই বরং না থাকলে আমার কিছুটা সময় বাচে। নিজের কাজগুলো ঠিক সময়ে করতে পারি। ফেসবুক থাকলে কিছুক্ষণ পর পর ঢুকতে হয়। দেখতে ইচ্ছে করে। ফেসবুক খাকলে এমনটাও হয় পাশে একজন লোক বসে আছে তার সঙ্গেও কথা বলা হয় না। আমার মনে হয়, যা হচ্ছে ভালোই হচ্ছে। রাইজিংবিডি।


শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট